ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:৪১ পিএম
বাংলাদেশ থেকে যেসব শ্রমিক বিদেশে যান, তাদের অধিকাংশই অদক্ষ। নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা না থাকায় কম মজুরিতে নিয়োগ, নিচু পদে কাজ করা, এমনকি চাকরিচ্যুত হওয়াসহ নানা রকম বিড়ম্বনায় পড়েন তারা, যা সরাসরি প্রভাব ফেলে রেমিট্যান্সের ওপর। বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা বিভাগের ‘প্রবাসী শ্রমিকদের ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা ও প্রভাব’ নিয়ে সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন অনুযায়ী বিদেশে ১ কোটি ২৫ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ দক্ষ।
বিদেশি কোম্পানিগুলো সবাই এখন দক্ষ শ্রমিক চায়। দক্ষ শ্রমিকের জন্য নতুন নতুন চাহিদা আসছে বিভিন্ন দেশ থেকে; কিন্তু সে অনুযায়ী দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারছে না রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। আমরা যদি দক্ষ শ্রমিক সরবরাহ করতে না পারি, তাহলে যারা এখন শ্রমিক নিচ্ছে সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশি অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য বাজার বন্ধ করে দিয়েছে মালদ্বীপ সরকার। বাংলাদেশের শ্রমিকদের বিষয়ে ইতিবাচক ধারণা থাকলেও এখানকার অদক্ষ শ্রমিক নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করেছে জাপানও। এগুলোর সবই আমাদের জন্য সতর্কতা সংকেত।
আমাদের প্রতিযোগী অন্য দেশগুলো দক্ষ শ্রমিক তৈরির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগেও দক্ষ শ্রমিক তৈরিতে নানারকম প্রতিষ্ঠান তৈরি করছে তারা; কিন্তু বাংলাদেশে এ বিষয়ে তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে না।
প্রবাসে ১০ অদক্ষ কর্মী যা আয় করতে পারেন, তার চেয়ে বেশি আয় করতে পারেন তিন দক্ষ কর্মী। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ৯০ লাখেরও বেশি প্রবাসী শ্রমিকের মাধ্যমে যেখানে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার, একই সময়ে ফিলিপাইন তাদের ৬৫ লাখ প্রবাসী শ্রমিকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পেয়েছে ৩ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার। তাই প্রশিক্ষিত কর্মীদের বিদেশে পাঠানোর ওপর জোর দেওয়া দরকার। অথচ দেশে প্রশিক্ষণের আধুনিক সুবিধা ও পর্যাপ্ত ট্রেনিং সেন্টার নেই। এ ব্যাপারে সরকারকেই প্রাথমিকভাবে বড় ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। লাভজনক হলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও এখানে বিনিয়োগ করবে। শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ খাতে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়লে, দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে তা বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।