স্মার্ট সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকার শেখ হাসিনার

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিগত ১৫ বছরের সরকার পরিচালনার পথপরিক্রমায় যা কিছু ভুলত্রুটি, তার দায়ভার আমাদের। সাফল্যের কৃতিত্ব আপনাদের। আমাদের ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমরা কথা দিচ্ছি, অতীতের ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করব।

আজ বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। সম্ভাবনার হাতছানি দেওয়া দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা দুরন্ত বাংলাদেশ। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের রূপান্তর ঘটেছে। আজকের বাংলাদেশ দারিদ্র্যক্লিষ্ট, অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর বাংলাদেশ নয়। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। 

তিনি বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দরিদ্র্যমুক্ত, স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাহআল্লাহ।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার সময় আমি এবং আমার ছোটবোন বিদেশে ছিলাম। সে কারণে আমরা প্রাণে বেঁচে যাই। দীর্ঘ ৬ বছর আমরা রিফিউজি হিসেবে প্রবাস জীবন কাটাতে বাধ্য হই। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জনগণের সমর্থন নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি। অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন সরকার, জাতির পিতার হত্যাকারী ও ষড়যন্ত্রকারী এবং যুদ্ধাপরাধীদের সব রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করেই আমি দেশে ফিরে আসি। 

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন থেকে ২০০১ সালের ১৫ জুলাই - এই ৫ বছর পূর্ণ করে ২৬ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরা ধান ও দানাদার শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি। স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণ, বয়স্ক, বিধবা, স্বামী নিগৃহীতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রবর্তন এবং বর্গাচাষিদের বিনা জামানতে কৃষি ঋণ প্রদান করি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং নানা চক্রান্তের ফসল হিসেবে বিএনপি-জামায়াত-জোট ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করে। এরপরেই দেশে বিপর্যয় নেমে আসে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে ২২ নেতা-কর্মীকে হত্যা এবং ৫০০’র বেশি মানুষকে আহত করে। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে যে ১১টি বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে-  

১. দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

২. কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।

৩. আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

৪. লাভজনক কৃষির লক্ষ্যে সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থা, যান্ত্রিকীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি।

৫. দৃশ্যমান অবকাঠামোর সুবিধা নিয়ে এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে শিল্পের প্রসার ঘটানো।

৬. ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

৭. নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করা।

৮. সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সবাইকে যুক্ত করা।

৯. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।

১০. সাম্প্রদায়িকতা এবং সব ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রোধ করা।

১১. সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা ও চর্চার প্রসার ঘটানো। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //