নির্বাচন নিয়ে নাটক ও তামাশা হচ্ছে: গণতন্ত্র মঞ্চ

নির্বাচন নিয়ে নাটক ও তামাশা হচ্ছে বলে মন্তব্য করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশে যা খুশি তাই করছে। এখন নির্বাচনী নাটকে কে কে অভিনয় করবে সেটা শেখ হাসিনা একাই ঠিক করেছেন। ডামি প্রার্থী, স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিদ্রোহী ও নৌকার প্রার্থী এরপর নাটকটা করবেন। এরকম খেলা খেলতে যদি এভাবেই একতরফা ভোট যদি সম্পন্ন করেন জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না।

আজ শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকাল ৪ টায় ‘একতরফা ভোট বর্জন করুন’ এই আহ্বান নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের গণসংযোগপূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

গণসংযোগপূর্ব সমাবেশ থেকে ৭ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা জারি রেখে বলা হয়, দেশ একটা ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী নিজেও সেকথা জানেন জন্যই তিনি দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন। দেশে যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হতে যাচ্ছে তা সামাল দিতে তিনি পারবেন না, সেটা জানেন। এরই মধ্যে লোপাটকৃত ৯২ হাজার কোটি টাকার গরমিল সামনে এসেছে।

সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ বলেন, আজকে গোটা জাতির মধ্যে যে বিষবাষ্প যারা ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে জয়লাভ করবেই। নির্বাচনের নামে খেলা, ভোটের খেলা যেটাই খেলছে সরকার। টিকবে না। মুক্তিযুদ্ধের সাথে বিশ্বাসঘাতকতাকারী, গণতন্ত্রের কবর রচনাকারী শেখ হাসিনার পতন হবেই হবে।

দলটির নেতৃবৃন্দ বলেন, সংবিধানের কথা বলে যারা ভুয়া নির্বাচন ও প্রহসনের নির্বাচন করছেন তারা জনগণের চোখে ধুলা দিতে পারবেন না, কেননা সংবিধানের ১২৩নং আর্টিকেলের খ-তে এখনো সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করার পরিস্থিতি আছে। নতুন অধিবেশন ডেকে এরপর সেসময় থেকে ৯০ দিন পর নতুন নির্বাচন দেয়া যাবে। কাজেই সংবিধানের দোহাই খাটে না।

নেতৃবৃন্দ এই নির্বাচন স্থগিত করে, তফসিল বাতিল করে এবং সমস্ত আন্দোলনকারী শক্তির সাথে বসে নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানান। তারা বলেন, একদিকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য গণতন্ত্র মঞ্চ যেমনি লড়বে তেমনি সেই রক্ষার ভিত্তি হবে ৩১ দফা। এই ৩১ দফায় রাষ্ট্র ও শাসনব্যবস্থা সংস্কারের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। বাংলাদেশেকে জাতীয় ভয়ঙ্কর সংঘাতময় পরিস্থিতি এবং গণতন্ত্রহীনতা থেকে উদ্ধার করতে হলে নতুন এই বন্দোবস্তের বিকল্প নাই।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আজ হুমকির সম্মুখীন। সমস্ত প্রকৃত বিরোধীপক্ষকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে আজকে জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে তারা অনেকগুলো নৌকা বানিয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই মাদারীপুরে তারা নিজেদের প্রার্থীকেই কুপিয়ে মেরে ফেলছে। আর শান্তিপূর্ণ বিরোধিতাকারীদের উপর তারা পরিকল্পিত নাশকতার দায় চাপাচ্ছে। দেশে তথাকথিত বাম ইনু-মেননের রাজনীতি শেষ, তাদের স্বতন্ত্র রাজনীতি বলে কিছু নাই। তারা নৌকা ছাড়া এমনকি নির্বাচনও করতে পারছে না। বাংলাদেশের মানুষকে আওয়ামী লীগ ভেড়ার পাল বানাতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ লড়াই করে তার সমস্ত বিজয় নিয়ে এসেছে। কাজেই দেশে আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র টিকবে না। জনগণ আন্দোলন করেই এমন ব্যবস্থা কারেয়ম করবে যাতে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়, জনগণ বাজারে ন্যায্যমূল্যে তার সমস্ত জিনিসপত্র কিনতে পারে। আজকের এই দুঃশাসন থাকবে না, জনগণ জনসমুদ্রের মতো গণঅভ্যুত্থান করে এদের পতন ঘটাবে।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাড. হাসনাত কাইয়ুয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী। সমাবেশ পরিচালনা করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য সাইফুল্লাহ হায়দার। সমাবেশের পর গণসংযোগের উদ্দেশে মিছিলটি প্রেসক্লাব থেকে পল্টন হয়ে কাকরাইল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে জাতীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণতন্ত্র মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //