বিএনপি নেতাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে গেছে: কাদের

বিএনপির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজকে বিএনপি নেতাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে গেছে। আন্দোলন হয় না, এই বছর না ওই বছর। আন্দোলন হবে কোন বছর? এই বছর বলে রোজার ঈদের পরে আন্দোলন হবে, এরপর বলে কোরবানির ঈদের পর আন্দোলন হবে! এরপর বলে পরীক্ষার পর আন্দোলন হবে! এভাবে দেখতে দেখতে ১৪ বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর, আন্দোলন বিএনপির নাগালে এলো না। 

আজ শনিবার (২২ জুলাই) বিকেল পৌনে ৬টার দিকে নোয়াখালী শহরের মাইজদীর শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করেন না। ভিসা নীতি তাকে ভয় দেখিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা করে তাকে ভয় দেখিয়েছে। শেখ হাসিনা বললেন, আমি শেখ মুজিবের কন্যা আমাকে ভয়ে দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। যত ভয়, হুমকি আসুক বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাথা নত করবে না, মাথা নত করতে পারেনা।

তিনি বলেন, তারেক রহমান কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে। সেই টাকার ৪০ কোটি শেখ হাসিনা উদ্ধার করেছে। এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। তারেক রহমানের অর্থ পাচারের কথা সারা দুনিয়ার মানুষ জানে। চুরির টাকা,পাচারের টাকা, দুর্নীতির টাকা, হাওয়া ভবনের টাকা।  এই অপকর্ম, অপশক্তিকে রুখতে হবে। 

শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ টেনে সেতুমন্ত্রী বলেন, সৎ, সাহসী, মানবিক একজন মাত্র নেতা শেখ হাসিনা। তিনি উন্নয়ন, দক্ষতা, সাহস ও কৌশলের জন্য সারা দুনিয়ায় আজকে প্রশংসিত। শুধু বাংদেশিরা নয়, একবাক্যে বিদেশিরাও শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা প্রতিদিন রাতে তিন থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা ঘুমান। বাকি ২১ ঘণ্টা দেশ নিয়ে ভাবেন, মানুষ নিয়ে ভাবেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, সে কারণে শেখ হাসিনাও কষ্ট পাচ্ছেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, জেনারেল জিয়াউর রহমান দম্ভ করে বলেছিলেন, মানি ইজ নো প্রবলেম। টাকা কোনো সমস্যা নয়। আর আজ লন্ডনে বসে জিয়াউর রহমানের পলাতক পুত্র তারেক রহমান, সে গতকাল স্কাইপিতে বলেছেন টাকার কোনো অভাব হবে না। পিতা যা বলেছেন, পুত্র তা-ই বলছেন। এতো টাকা এলো কোথা থেকে।

তিনি বলেন, তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে গেছেন। আর রজনীতি করবে না বলে অঙ্গীকার করেছেন।  সেই তারেক রহমান এখন বলে টাকার কোনো অভাব হবে না। আন্দোলন করে শেখ হাসিনার পতন ঘটাও। আজকে তারেক রহমান টাকার দম্ভ দেখাচ্ছেন। টাকা হলে নাকি আন্দোলন করতে পারবেন। 

তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতাকে, তারেক রহমান? চোর, চোরটা বাংলাদেশের মানুষ জানে, এই লুটেরা তারেক রহমান। এই দুর্নীতিবাজ তারেক রহমান। বাংলাদেশের মানুষ জানে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে লন্ডনে পালিয়ে গেছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন করবে এটাকি বিশ্বাস হয়! অলিগলিমে শোর হ্যায়, তারেক রহমান চোর হ্যায়। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, টাকা পাচারের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে।  

মির্জা ফখরুলের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল মিথ্যাই বলে যাচ্ছেন, এ মিথ্যাই তাদের পতন ঘটাবে।     

সেতুমন্ত্রী বলেন, নোয়াখালীর মানুষকে বিএনপির নেতারা অনেক ভুল বুঝাতে চেয়েছেন। বিএনপিকে হাতি বানিয়েছিলো, এই নোয়াখালীর সহস্র মানুষকে ধোঁকা দিয়ে। আজকে ধোঁকা দেওয়ার দিন শেষ। আজকে নোয়াখালীর মানুষ বঙ্গবন্ধুর কন্যার সাথে আছে। কর্মীরা চায় স্মার্ট বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, রাজনীতি করার লোক আজকে রাজনীতিতে নেই। কিছু ব্যক্তি, কিছু গোষ্ঠী আজকে রাজনীতিতে এসে টাকার জোরে, গায়ের জোরে, মাস্তানি করে, বন্দুক উঁচিয়ে বাংলাদেশেকে বারবার নসাৎ করছে, দখল করছে।  

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সহিদ উল্যাহ খান সোহেলের সঞ্চালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন, নোয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহীম, নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ কিরণ, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা খানম, নোয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, সাবেক সংসদ সদস্য ও হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহাকারী জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ।    

এ সময় বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ড. এবিএম জাফর উল্যাহ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ. কে. এম সামছুদ্দিন জেহান, চাটখিল উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সেতুমন্ত্রীর ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত, নোয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্যাহ ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।