ভারত এখন আ.লীগের প্রতি প্রসন্ন না: হাসনা মওদুদ

ভারত এখন আওয়ামী লীগের প্রতি প্রসন্ন না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও উপ-রাষ্ট্রপতি এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সদস্য মরহুম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সহধর্মিণী সাবেক এমপি হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদ।

তিনি বলেন, আজকে দেশতো আমরা ভারতের হাতে দিয়েই দিয়েছি। না চাইতে অনেক কিছু ভারত পেয়েও তারা এখন আওয়ামী লীগের প্রতি প্রসন্ন না। তারা জানে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে শ্রদ্ধা করে না। একচেটিয়াভাবে রাতের বেলা ভোটের অধিকার হরণ করে। মওদুদ সাহেবকে রাস্তায় বের হতে দেয়নি, বাজারে যেতে দেয়নি। এই কথা গুলো ভুলে গেলে চলবে না। এই কথাগুলো আওয়ামী লীগের আসল ইতিহাস।

আজ মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুর ১টার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব মোহাম্মদনগর গ্রামে মওদুদ আহমদের নিজ বাড়িতে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন।  

আমেরিকার প্রসঙ্গ টেনে দলীয় নেতাকর্মীদের হাসনা মওদুদ বলেন, আমেরিকা থেকে আপনারা শুনেছেন, যদি কেউ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠানে বাধা দেয় তাহলে তার বংশধরকে কোন দিন আমেরিকায় ঢুকতে দিবে না। এবং এটা বিরাট থাপ্পড়। কারণ এদের সবার ছেলে মেয়ে বিদেশে বাস করে। গণতন্ত্রে কেউ যদি বাধা দেয় আপনারা শুধু ছবি তুলবেন, ভিডিও করবেন। এ ছবিগুলো সব পশ্চিমা অ্যাম্বাসেডদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।  আমার (বাসা) ভাড়াটিয়া হলো আমেরিকান অ্যাম্বাসেডর। সুতারাং সে এ জায়গার খবর রাখবে। রাখবে না, নিশ্চয় রাখবে। আমি আমার কাগজপত্র সব সময় তার কাছে পাঠায়। আমার এলাকায় যদি কোন কিছু হয়। সবচেয়ে আগে খবর যাবে আমেরিকান অ্যাম্বাসেডরের কাছে। আপনারা সবাই নির্বিঘ্নে ভোট করবেন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য। বাংলাদেশের গণতন্ত্র উদ্ধার প্রথম শুরু হবে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে।    

সাবেক এমপি হাসনা মওদুদ বলেন, জিয়াউর রহমান তার জীবন দান না করলে এ দেশকে আমরা স্বাধীনভাবে পেতাম না। আজকে আমাদের কর্তব্য বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা। তার উপযুক্ত সন্তান তারেককে দেশে ফিরে এসে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া। এসময় তারেককে কেন এত ভয়, এমন প্রশ্ন রাখেন হাসনা মওদুদ।  

জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ব্যক্তি গত স্মৃতিচারণ করে হাসনা মওদুদ বলেন, তিনি অত্যন্ত লাজুক হ্যান্ডসাম ছিলেন। মওদুদ আহমেদ জিয়াউর রহমানের একনিষ্ঠ-ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক বন্ধু ছিলেন এবং অনেক ভালোবাসতেন শ্রদ্ধা করতেন।

হাসনা মওদুদ আরও বলেন, আজকে যে যাই বলুক অনেকে শুনেছে শহীদ জিয়া ঘোষণা দিয়েছেন স্বাধীনতার। তার এক ডাকে পুলিশ, আর্মি সবাই একত্রিত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করেছিল। ১৯৭১ সালের জুন মাস পর্যন্ত শহীদ জিয়া ছিলেন সেক্টর কমান্ডার-১। তারপর তিনি ছিলেন জিয়া ফোর্সের হেড। বাংলাদেশী ন্যাশনাল ইজমের প্রবক্তা ছিলেন জিয়াউর রহমান। সংবিধানে তিনি বিসমিল্লাহ সংযোজন করেছেন। আর্মি-পুলিশে শৃঙ্খলা আনলেন। এরপর মুক্ত করলেন খবরের কাগজ। চারটি খবরের কাগজ ছাড়া সব পত্রিকা শেখ মুজিবুর রহমানের সময় বন্ধ ছিল। বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা আজ প্রকাশ্যে সাংবাদিকতা করতে পারছে জিয়াউর রহমানর মুভমেন্টের কারণে।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের সংকটময় মুর্হূতে মওদুদ তার সাথে ছিলেন। এমন একজন রাষ্ট্রপতি আমরা রাখতে পারলাম না। তাকে হারাতে হলো। আজকে জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ কোথায় উঠে যেত। শ্রমিকদের নিয়ে, কৃষি নিয়ে কথা বলতেন। ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে মুক্ত করেছেন। তিনি সার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা।    

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফোরকান ই আলমের সভাপতিত্বে ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ গোলাম মোমিত ফয়সাল, কবিরহাট উপজলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুর রহমান, কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু, কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজমুল হুদা ফরহাদ, বসুরহাট পৌরসভা বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন টিপু, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //