৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল সোমবার (৬ মার্চ) সারাদেশে দলীয় সমাবেশ ও র্যালির আয়োজন করবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিবৃতিতে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকার কর্মসূচির মধ্যে আছে- সোমবার সকাল ৮টায় সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তিভবনে দলীয় পতাকা উত্তোলন, বিকেল সাড়ে ৩টায় পুরানা পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ ও লাল পতাকা মিছিল।
বিবৃতিতে দেশের শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর, মেহনতি মানুষসহ সর্বস্তরের দেশবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বিগত দিনে পার্টির পতাকা সমুন্নত রাখতে গিয়ে যারা শহীদের মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের স্মৃতির প্রতি তারা গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
দলের সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ সিপিআই'র দ্বিতীয় কংগ্রেসে পৃথকভাবে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা ভিন্ন অধিবেশনে মিলিত হয়ে স্বতন্ত্রভাবে পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি ও একই সঙ্গে পার্টির পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটির চতুর্থ সম্মেলনে পৃথক কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে স্বতন্ত্র ও স্বাধীন পার্টি হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি কার্যক্রম শুরু করে এবং ওই সম্মেলনকে প্রথম পার্টি কংগ্রেস হিসেবে গ্রহণ করা হয়।’
এতে আরও বলা হয়, ‘পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পরই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কমিউনিস্ট কর্মীদের ওপর হত্যা-নির্যাতন চালায়। তাদের ওপর জেল-জুলুম-হুলিয়ার খড়গ নেমে আসে। হাজার হাজার কমিউনিস্টকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহীর খাপড়া ওয়ার্ড কমিউনিস্ট রাজবন্দিদের ওপর পুলিশ গুলি চালালে ৭ কমরেড শহীদ হন। পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্টরা তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। তেভাগা, নানকার, টংকসহ অন্যান্য কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলনের পাশাপাশি ছাত্র ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন সংগঠিত করেন। ঐতিহ্যবাহী গণসংগঠনগুলো প্রতিষ্ঠার পেছনে কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকাই মুখ্য।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে নানা নিপীড়ন সহ্য করে পার্টি তার ভূমিকা পালন করে এগুচ্ছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়—২০০১ সালে ঢাকার পল্টন ময়দানে সিপিবির লাখো মানুষের সমাবেশে বোমা হামলা চালিয়ে ৫ জনকে হত্যা করা হয়। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই, জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামাত-শিবির নিষিদ্ধের আন্দোলনসহ সব আন্দোলন-সংগ্রামেই সিপিবি অনন্য ভূমিকা পালন করেছে।’
আরও বলা হয়, ‘ভাষা আন্দোলনসহ দীর্ঘদিনের গণসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে সিপিবির ভূমিকা বিশেষ মর্যাদার ও অনেক বিষয় মৌলিক প্রভাব সৃষ্টিকারী। বর্তমান আওয়ামী দুঃশাসন-দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সিপিবি সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে সংগ্রাম করে চলেছে' বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। সিপিবি বর্তমানে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারসহ দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকেন্দ্রিক দ্বি-দলীয় মেরুকরণের বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলার কঠিন ও জটিল পথ পরিক্রমায় নানামুখী তৎপরতায় সিপিবি তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। দেশ ও জাতির কাঙ্ক্ষিত মুক্তির জন্য সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তন সাধনে সিপিবি কাজ করে যাচ্ছে।’
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : রাজনীতি সিপিবি পাকিস্তান গণসংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধ
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh