সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল

খুলনায় সমাবেশ, হরতাল-কারফিউ কিছুই মানবে না বিএনপি

আগামী ২২ অক্টোবর খুলনায় অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে নেতাকর্মীরা হরতাল কারফিউ উপেক্ষা করে অংশ নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ বুধবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সাথে পৃথক সংলাপ শেষে তিনি এ কথা বলেন।

আগামী ২১ ও ২২ অক্টোবর খুলনা থেকে চলাচলকারী সকল গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা পরিবহন মলিক সমিতি। বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, হরতাল কারফিউ কিছুই মানা হবে না; সকল বাধা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা খুলনার জনসমাবেশে উপস্থিত হবেন।

সমাবেশের আগে গণপরিবহন বন্ধের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ময়মনসিংহে একইভাবে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছিল, কিন্তু সমাবেশ ঠেকাতে পারেনি। মানুষ ট্রলারে করে, রিকশায় করে, হেঁটে সমাবেশে জড়ো হয়েছে। তারা গাড়ি বন্ধ করুক আর যাই করুক গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলনে নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করবে ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির সভা সমাবেশে বাধা দেওয়া হবে না, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোনো কথা কি তারা রাখতে পেরেছে? পারেনি, কারণ তারা বিশ্বাস করে যা বলব, তা পারবো না। উল্টোটা করে, সুতরাং আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।

‘বিএনপি আরেকটি ১/১১-এর দুঃস্বপ্ন দেখছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‌বিএনপি দিবাস্বপ্ন দেখে না। দেখি একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের, আমরা স্বপ্ন দেখি মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার, আমরা স্বপ্ন দেখি সত্যিকার অর্থে একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার। এই অনির্বাচিত, অবৈধ, ভোটের অধিকার হরণকারী, লুটেরা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে তাদের পদত্যাগের দাবিতে আমরা একটি ঐক্যমতের সৃষ্টি করে আন্দোলনে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলছি।

তিনি বলেন, প্রথম দফা শেষ করে দ্বিতীয় দফায় ইতোমধ্যে ১৪ টি দলের সাথে আলোচনা শেষ করেছি। এর অংশ হিসেবে আজকে বাংলাদেশ জাতীয় দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির বলেছি। তাদের সাথে আলোচনায় আমরা যে দাবিগুলো নিয়ে কথা বলেছি। এর মধ্যে প্রথম যেগুলো রয়েছে- এই সংসদকে ভেঙে দিতে হবে, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর নির্বাচনকালীন সময়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। সেই সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই কমিশনের মাধ্যমে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন করে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। এই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

বিএনপির শীর্ষ নেতা বলেন, দাবিগুলোর মধ্যে মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যেটা রয়েছে তাহলে আমাদের গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা মনে করি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবচেয়ে বেশি ত্যাগী নেতা বেগম খালেদা জিয়া। যাকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে, তাঁকে মুক্তি দিতে হবে। একই সাথে বিরোধী দলীয় নেতাদের নামে যে মিথ্যে মামলা রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা বলেছি যে হারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব জিনিসের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। গত পনেরো বছর ধরে যে ভয়াবহ রকমের দুর্নীতি হয়েছে সেই দুর্নীতি যারা ঘটাচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করা হবে। একই সাথে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা আন্দোলন করছি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একমত হয়েছি‌ বাংলাদেশ জাতীয় দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সঙ্গে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করবো।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //