মেয়র হানিফের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী আজ

ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী আজ ১ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার)।

এ উপলক্ষে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি অনুসারে স্বল্পপরিসরে কবর জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। 

তার ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বাবার আত্মার শান্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ হানিফ ১৯৪৪ সালের ১ এপ্রিল পুরান ঢাকার সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন। তার বাবা আবদুল আজিজ ও মা মুন্নী বেগম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অবিচল ছিলেন হানিফ।

শুরু থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অবিচল। তিনি ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পান। এসময় ছয়দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন ও প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সব আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে প্রথম কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মোহাম্মদ হানিফ।

হানিফকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন ও ভালোবাসতেন বঙ্গবন্ধু। তাই ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু তার ঢাকা-১২ আসন ছেড়ে দেন ও হানিফ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে জাতীয় সংসদে হুইপেরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ’৭৬ সালে মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন ও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

১৯৯৪ সালে লক্ষাধিক ভোটের ব্যাবধানে ঢাকার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন। তারই নেতৃত্বে ’৯৬-এর মার্চের শেষ সপ্তাহে ‘জনতার মঞ্চ’ গঠন করেন যা ছিল আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট। ’৯৬-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগের বিজয়ে ব্যাপক ভুমিকা রাখেন মোহাম্মদ হানিফ।

২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে শেখ হাসিনার ওপর নারকীয় গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে তার প্রিয় নেত্রীকে রক্ষা করেন মোহাম্মদ হানিফ। একের পর এক ছোড়া গ্রেনেডে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রাণে রক্ষা পেলেও মারাত্মক আহত হন তিনি। তার মস্তিকসহ দেহের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য স্প্লিন্টার ঢুকে পড়ে। দুঃসহ যন্ত্রনা সহ্য করেই মোহাম্মদ হানিফ জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছেন। 

২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাঙ্গণে এক সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতা দেয়ার সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ব্যাংককে র্দীঘদিন চিকিৎসা শেষে ঢাকায় ফিরে ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাতে ৬২ বছর বয়সে ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

হানিফের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি অনুসারে স্বল্পপরিসরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনসহ মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, মেয়র হানিফ স্মৃতি সংসদও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কবর জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ ইত্যাদি। -বাসস

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //