নওগাঁ-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে নৌকার সম্ভাব্য প্রার্থী

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের উপ-নির্বাচনকে ঘিরে গণসংযোগ, পথসভা শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

প্রায় এক যুগ এমপি থাকার পর গত ২৭ জুলাই সাংসদ ইসরাফিল আলম মারা যাওয়ায় আসনটি শূন্য হয়। রাণীনগর ও আত্রাই এই দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-৬ ও সংসদীয় আসন-৫১। 

ইতোমধ্যে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের কয়েক জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছেন- প্রয়াত সাংসদ ইসরাফিল আলমের স্ত্রী পারভীন সুলতানা বিউটি, সাবেক সংরক্ষিত আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন মনোয়ারা হক, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম, রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আসাদুজ্জামান নূরুল, রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন। 

এছাড়াও নওগাঁ জেলা যুবলীগের সভাপতি খোদাদাদ খাঁন পিটু, সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায় ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমনের নাম শোনা যাচ্ছে।

জানা গেছে, ১৯৯১ ও ৯৬ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক সাংসদ মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান। ২০০১ সালে ইসরাফিল আলমকে পরাজিত করে আলমগীর কবীর বিজয়ী হন। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে আলমগীর কবির এলডিপিতে যোগ দেন। একই বছরে এলডিপি থেকে পদত্যাগ করেন। ২০০৮সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বুলু। 

এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরকে পরাজিত করে আবারোও বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম। মূলত এ আসনটি চারবার বিএনপির অধীনে থাকলেও ২০০৮ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে।

প্রয়াত সাংসদ ইসরাফিল আলমের স্ত্রী পারভীন সুলতানা বিউটি বলেন- এই আসনে আমি মানুষের কাছে একটি পরিচিত মুখ। স্বামীর পাশাপাশি আমিও বিভিন্ন সময় এই দুই উপজেলার মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছি। যদি প্রধানমন্ত্রী আমাকে সুযোগ দেন তাহলে আমি ইসরাফিলের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করবো ইনশাল্লাহ।

সাবেক সংরক্ষিত আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন মনোয়ারা হক বলেন- আমি ১৯৯৬ সালে সংরক্ষিত আসনে প্রথম এমপি হওয়ার পর থেকে রাণীনগর ও আত্রাইবাসীর জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। তাই প্রধানমন্ত্রী আমার সবকিছু বিবেচনা করে যদি আমার এলাকার মানুষদের সেবা করার সুযোগ দেন তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ্রগ্রহণ করবো।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী বলেন, আমি রাণীনগরের সন্তান। কর্ম আর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমাকে রাজশাহীতে বসবাস করতে হলেও আমার সব কিছুই আমার এলাকার মানুষের জন্য। গত সংসদ নির্বাচনেও আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। তাই দল যদি আমাকে মনোয়ন দেয় তাহলে আমি নির্বাচন করবো এবং শতভাগ বিজয়ী হবো বলে আশাবাদী।

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বলেন নির্বাচনের আগে অনেক অতিথি পাখিদের দেখা যায়। কিন্তু পরে আর খোঁজ থাকে না। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অবলম্বন করে এই অঞ্চলের মানুষদের সেবা করতে চাই যদি প্রধানমন্ত্রী আমাকে সেই সুযোগটি দেন।

রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আসাদুজ্জামান নূরুল বলেন আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করেছি আর বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি আগামীতেও করবো। রাণীনগরের সন্তান বলে সবসময় এই অঞ্চলের মানুষের সুখে-দু:খে থাকার চেস্টা করেছি। তাই আমার সবকিছু বিচার-বিবেচনা করে যদি দল আমাকে নৌকা প্রতীক দেয় তাহলে নির্বাচন করবো। তা না হলে নৌকা যে পাবে তার হয়ে কাজ করবো।

রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন বলেন যদি প্রধানমন্ত্রী চান তাহলে আমরা আমাদের পছন্দের ব্যক্তিদের তালিকা পাঠাবো। আমি আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী এই অঞ্চলের জন্য স্বাধীনতার পক্ষের একজন সৎ, শিক্ষিত ও নির্ভিক মানুষকেই নৌকা প্রতিক দিবেন। প্রধানমন্ত্রী যাকে মনোনয়ন দিবেন আমরা তার হয়েই কাজ করবো।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //