ছোটবেলায় শিশুরা বানিয়ে কথা বললে মা-বাবার শুনতে ভালো লাগে। কিন্তু বেড়ে ওঠার সাথে সাথে সেটা অভ্যাসে পরিণত হলে সমস্যা তৈরি হয়।
সাধারণত ৪-৫ বছর বয়স থেকে মিথ্যা বলার শুরু। বেশিটাই মা-বাবার কাছে বলে শিশুরা। তবে শিশুকে যেমন শেখাতে হবে যে সত্যি বলা প্রয়োজন, তেমনই বুঝতে হবে কেন সত্য গোপন করছে সে।
সব খেয়াল করলে দেখা যাবে এই সময় থেকে সমাজ ও আশপাশের মানুষের বিষয়ে সচেতন হচ্ছে সে। কার কীসে খারাপ লাগবে, কোনটা ভাল লাগতে পারে- এসব ভাবনাও আসবে সেখান থেকেই। আর যা বড়দের অপছন্দের বলে তার ধারণা হবে, সে সব কাজের বিষয়ে মিথ্যা বলতে শিখবে সে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন সাইকোলজি বিভাগের চাইল্ড সাইকোলজিস্ট ও ডেমনেস্ট্রেটর সাবরিনা মাহমুদ বলেন, শিশুরা বেশিরভাগ সময় আত্মরক্ষার উপায় হিসেবে মিথ্যা বলে। মা-বাবার নেতিবাচক প্যারেন্টিংয়ের কারণেও অনেক সময় মিথ্যা বলার অভ্যাস হয়।
আত্মবিশ্বাসের অভাব ও অনিশ্চয়তার কারণেও অনেক সময় শিশুরা মিথ্যা বলে।
এমন সময়ে শিশুর প্রয়োজন বকুনি নয়। বরং এটা তাকে বোঝাতে হবে যে, মিথ্যা বলাটাও খারাপ লাগার কারণ হতে পারে। যদি সে এমন কিছু কাজ লুকোতে চায়, যা তার মা-বাবার পছন্দের নয়, তবে তাকে সে কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে শিখতে হবে। কিন্তু মিথ্যা বলা যে আসলে কোনো সমাধান দিতে পারে না, ছোট থেকেই বোঝানো জরুরি সন্তানকে।
মিথ্যা বলা রাখাল বালকের গল্প, কাঠঠোকরার গল্প- এ ধরনের গল্প ছোটবেলা থেকেই শিশুদের শোনাতে থাকবেন। এতে করে তারা শিখতে পারবে, মিথ্যা বলার কারণে কী ধরনের পরিণতি হতে পারে।
শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই মা-বাবার কাছ থেকে দেখে শেখার চেষ্টা করে। তারা ছোটবেলা থেকে তা-ই শেখে, যা তারা চোখের সামনে দেখে। তাই যেকোনো আচরণ করার আগে মা-বাবার সতর্ক থাকা উচিত।
সন্তানের সাথে কথা বলুন। কেন সে মিথ্যা বলছে ও কী কারণে সত্যটাকে সে লুকিয়ে রাখতে চায়, এটা আপনার জানতে হবে। তবে রাগারাগি করে নয়, বুঝিয়ে জিজ্ঞাসা করার চেষ্টা করুন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh