আজ বিশ্ব ভেগান দিবস

সুস্থ জীবন পেতে হতে হবে খাদ্য সচেতন

আমাদের লাইফস্টাইল দিনে দিনে এমন হচ্ছে যে- ফাস্ট ফুড ও চর্বিযুক্ত খাবারের দিকে আমরা খুব বেশি ঝুঁকে পড়ছি। ফলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এমনকি ক্যান্সারের মত কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। কিন্তু একটু সচেতন হলেই নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। তাই সুস্থ জীবন পেতে খাদ্যাভাসে আনতে হবে পরিবর্তন, হতে হবে খাদ্য সচেতন।

এ ক্ষেত্রে ‘ভেজিটেরিয়ান’ বা ‘নিরামিষ ভোজী’ হলে দীর্ঘদিন রোগহীন থাকা সম্ভব। আর এই সূত্র লুফে নিয়েছেন বিশ্বের অসংখ্য মানুষ। অনেকেই খাদ্যাভাসে পরিবর্তন এনে হয়েছেন ‘ভেগান’।

আজ মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) ‘বিশ্ব ভেগান দিবস’। প্রতিবছর নভেম্বরের ১ তারিখে এ দিবসটি পালিত হয়। মূলত এটি সারাবিশ্বের সব নিরামিষভোজীদের জন্য এক বার্ষিক উদযাপন।

১৯৯৪ সালে যুক্তরাজ্যে অবস্থিত ‘দ্য ভেগান সোসাইটি’র প্রেসিডেন্ট লুইস ওয়ালিস এই দিবসটির প্রবর্তন করেন। ভেগান সোসাইটির ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যেই মূলত দিনটির প্রবর্তন হলেও পরবর্তীতে তা সারাবিশ্বের ভেজিটেরিয়ানদের জন্যই এক তাৎপর্যপূর্ণ দিনে পরিণত হয়।

যদিও অনেক আগ থেকেই পহেলা অক্টোবর পালন করা হয় ‘ওয়ার্ল্ড ভেজিটেরিয়ান ডে’ বা ‘বিশ্ব নিরামিষ দিবস’। নর্থ আমেরিকান ভেজিটেরিয়ান সোসাইটি ১৯৭৭ সাল থেকে অক্টোবরের ১ তারিখ ‘ওয়ার্ল্ড ভেজিটেরিয়ান ডে’ হিসেবে পালন করে আসছিল। ওয়ার্ল্ড ভেজিটেরিয়ান ডে মূলত পুরো অক্টোবর মাস জুড়েই পালিত হয় নিরামিষ খাওয়ার বিষয়ে মানুষকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে। এর কার্যক্রম শেষ হয় নভেম্বরের ১ তারিখ ‘ওয়ার্ল্ড ভেগান ডে’তে এসে।

‘ভেজিটেরিয়ান’ বা ‘নিরামিষ ভোজী’-এ বিষয়টির সাথে আমরা কম বেশি পরিচিত। কিন্তু ইদানিং সারা বিশ্বে আরও একটি খাদ্যাভ্যাসের প্রচলন শুরু হয়েছে। দিনে দিনে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে খাদ্যাভ্যাসটি। এর নাম হচ্ছে ‘ভেগান’। মূলত, ভেজিটেরিয়ান (vegetarian) শব্দটির প্রথম তিনটি ও শেষ দুটি অক্ষর নিয়ে তৈরি হয়েছে ভেগান (vegan)। সহজভাবে এর অর্থ যদি বলি তা হবে ‘উদ্ভিদভোজী’।

সাধারণত নিরামিষাশীদের খাদ্য তালিকায় কোনো প্রকার প্রাণীর মাংস থাকে না। আর একজন ভেগান শুধু মাংস নয়- পোল্ট্রি, মাছ, দুগ্ধজাতীয় খাবার, ডিম ও মধু— এসবের কোনো কিছুই খান না। অর্থাৎ ভেগানরা ভেজিটেরিয়ানদের মধ্যেও আরো অনেক বেশি কট্টর। এমনকি তারা পশুর চামড়া, ওল বোনা ও মুক্তার ব্যবহারকেও সমালোচনার চোখে দেখেন। ভেগানরা মূলত শাক-সবজি ও ফল-মূল জাতীয় খাদ্যই রাখেন তাদের খাদ্য তালিকায়।

খাদ্য তালিকায় মাংস না থাকাটা নতুন কিছু নয়। আজ থেকে আড়াই হাজারেরও বেশি (২৫০০) সময় আগে প্রাচীন ভারতে এই চর্চা ছিল। এ ছাড়া ভূমধ্যসাগরীয় এলাকাতেও এমন প্রচলন ছিল বলে জানা যায়।

গণিত শাস্ত্রবিদ পিথাগোরাস ছিলেন প্রাচীন গ্রিক নাগরিক। তিনি সকল প্রাণীর প্রতি মমত্ব ও দয়া প্রদর্শনের পক্ষে বলেছেন। কারণ তিনিও ছিলেন একজন ‘ভেগান’ বা নিরামিষাশী। যিনি খ্রিস্টের জন্মের ৫শ’ বছর আগে জীবিত ছিলেন। ‘ভেজিটেরিয়ান’ ধারা জনপ্রিয় হয়ে উঠার আগে প্রচলন ছিল ‘পিথাগোরিয়ান ডায়েট’-এর। অর্থাৎ যারা খাদ্য তালিকায় মাংস পরিহার করত তাদেরই তখন বলা হতো ‘পিথাগোরিয়ান ডায়েট’ মেনে চলা মানুষ।

১৯৪৪ সালে যুক্তরাজ্যের ডাল্টন ওয়াটসন প্রতিষ্ঠা করেন ভেগান সোসাইটি। মূলত তিনিই ‘ভেগান’ শব্দটির প্রচলন ঘটান। প্রাণীর প্রতি প্রেম এবং সেই সাথে নিজের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ‘ভেগান’ হয়ে উঠছে জনপ্রিয়। তাইতো সারা বিশ্বে পালন করা হয়- ‘বিশ্ব ভেগান দিবস’।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //