বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির দায় জনগণের কাঁধে

নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে আছে। এর মধ্যেই রমজানের আগে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দামও বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি সর্বনিম্ন ৩৪ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৭০ পয়সা বাড়ার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এই হিসাবে গড়ে ইউনিটপ্রতি ৫২ পয়সা করে বাড়বে। শতকরা হিসাবে তা ছয় শতাংশের মতো। এর আগে গত বছরের ১৮ জানুয়ারি নির্বাহী আদেশে গড়ে ৮২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল গ্যাসের দাম। ওই সময় বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয় ১৭৯ শতাংশ।

স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন খরচ আরও বাড়বে। যা পরোক্ষভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে। সরকার যদিও বলছে দ্রব্যমূল্য কমানো তাদের অগ্রাধিকার। কিন্তু বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়লে দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির ঘোড়া যে আরও জোরসে ছুটবে তা বলাই বাহুল্য।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বিদ্যুৎ খাতে অব্যবহৃত সক্ষমতা ও তার ভাড়া হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণ। তেল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় অন্য জ্বালানির তুলনায় তিন গুণের বেশি। তবু সারা বছরই তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে সরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ১০ শতাংশ কমালে বছরে সাশ্রয় হতে পারে অন্তত নয় হাজার কোটি টাকা।

তাই আমরা মনে করি, বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমানোর দায় জনগণের ওপর না চাপিয়ে বরং মেয়াদ শেষে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি নবায়ন না করা, ‘বিদ্যুৎ নেই, বিল নেই’ শর্তে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি করা, পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রকেও চুক্তি সংশোধন করে একই শর্তে আনা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়ে খরচ কমানো যেতে পারে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //