ক্যাপিটল হিল দাঙ্গা

প্রাউড বয়েজের সাবেক নেতার ২২ বছরের জেল

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার অভিযোগে প্রাউড বয়েজের সাবেক নেতা এনরিক টারিওকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ওয়াশিংটন জেলা জজ আদালত। যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধের উসকানি, রাষ্ট্রদ্রোহের ষড়যন্ত্র এবং আরও বেশ কয়েকটি অপরাধে গত মে মাসে ৩৯ বছর বয়সী সাবেক এই নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মঙ্গলবার (৫সেপ্টেম্বর) অভিযুক্ত টারিওকে ওয়াশিংটন ফেডারেল কোর্টাহাউজে তোলা হয়। এ সময় কমলা রঙের পোশাক পরিহিত ছিলেন তিনি। তার হাজিরার সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল জোরদার। 

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডের এটাই প্রথম আদেশ। যদিও দাঙ্গার সময় টারিও (৩৯) ওয়াশিংটনে অবস্থান করছিলেন না কিন্তু সহযোগী হিসেবে তার প্রত্যক্ষ মদদ ছিল বলে জানা যায়। সেসময় ১ হাজার ১০০’র বেশি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন দাঙ্গার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার ফলে। বিক্ষোভকারীরা ২০২০ সালে ট্রাম্পের পক্ষে নির্বাচনে কারুচুপি করে তাকে হারানো হয়েছে বলে অভিযোগ আনেন। 

এদিকে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন,যদি তিনি ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট পদে পুননির্বাচিত হন তবে সবাইকে ক্ষমা করে দিবেন। 

পরে রায় ঘোষণার সময় তাকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তে দেখা যায়। এ সময় দাঙ্গায় জড়িত থাকায় নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হন তিনি। ক্ষমা চান পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে।

আদালতকে তিনি বলেন, ‘আমি খুবই লজ্জিত এবং হতাশ। আমাকে সারা জীবন সেই লজ্জা বয়ে বেড়াতে হবে।’

রাষ্ট্রপক্ষ এ সময় ৩৩ বছরের সাজার আবেদন করলেও টারিওর আইনজীবী ১৫ বছরের বেশি সাজা না দিতে অনুরোধ করেন আদালতকে। 

তিন সপ্তাহ আগে আফ্রিকানদের আন্দোলনের সময় একটি ব্যানার পোড়ানোর ঘটনায় গ্রেপ্তার হন। নিজেকে আফ্রো-কিউবান হিসেবে দাবি করা টারিও এর আগেও গ্রেপ্তার হলে পরে জামিনে মুক্তি লাভ করেন। তিনি বলেন, দাঙ্গার সময় বাল্টিমোরে অবস্থান করছিলেন। 

এদিকে গত সপ্তাহে প্রাউড বয়েজের আরেক সদস্য ইথান নরডিয়ানকে ১৮ বছরের সাজা দেন আদালত। সংগঠনটির অন্য আর দুজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী হলেন- ডমিনিক পেজ্জোলা ও জাখারি রিল। তাদেরকে যথাক্রমে ১০ ও ১৫ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে আরেক সদস্য জো বিগস পেয়েছেন ১৭ বছরের সাজা। 

২০২০ সালের নভেম্বরে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন বিষয়টি স্বীকার করে প্রাউড বয়েজের এই সাবেক নেতা বলেন, আমি রাজনৈতিকভাবে উৎসাহিত ছিলাম না । ক্ষতি করা বা নির্বাচনের ফল পাল্টে দেওয়ার লক্ষ্য ছিল না আমার। আর এটা সম্ভবও ছিল না।

বিচারককে উদ্দেশ্য করে টারিও বলেন, অনুগ্রহ করে আমার প্রতি দয়া দেখান। জীবন থেকে ৪০টি বছর কেড়ে নেবেন না। এ সময় আদালতে চোখের পানি মুছতে মুছতে তার সাজা হ্রাসের জন্য বিচারকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন তার মা।

জেলা জজের বিচারক টিমোটি কেলি বলেন, ওই দিনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভিত্তিতে  আঘাতের পাশাপাশি মার্কিন গণতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। মানুষের ভোটকে অস্বীকারও করা হয়েছিল। আর সে কারণেই চরমতম শান্তি দেওয়া হচ্ছে অভিযুক্তদের।

সূত্র: বিবিসি 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //