জনসনের করোনার এক ডোজের টিকা অনুমোদন যুক্তরাষ্ট্রের

করোনাভাইরাস ঠেকাতে জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি এক ডোজের টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ। ফাইজার ও মর্ডানার তৈরি টিকার পর দেশটিতে এ নিয়ে তৃতীয় কোন টিকার অনুমোদন দেয়া হলো।

গতকাল শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এ অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ফাইজার ও মডার্নার টিকা অনুমোদন দেয়।

এই টিকার সুবিধা হলো, এটিকে ফ্রিজারে নয়, বরং সাধারণ রেফ্রিজারেটরেই সংরক্ষণ করা যাবে। তাছাড়া এ টিকা দামেও তুলনামূলক সস্তা, সংরক্ষণেও সুবিধা আছে। 

পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই টিকাটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ঠেকাতে পারে। তবে সাধারণ আক্রান্ত হওয়ার হার ঠেকাতে সক্ষম ৬৬ শতাংশ ক্ষেত্রে।

বেলজিয়ামের প্রতিষ্ঠান জ্যানসেন এটি তৈরি করেছে। এর আগে নিজেদের টিকার কার্যকারিতাসংক্রান্ত ফলাফল গত মাসে প্রকাশ করে জনসন অ্যান্ড জনসন। ওষুধ উৎপাদনকারী বৃহৎ প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান জ্যানসেন বলেছে, তারা যেসব তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে, সে অনুযায়ী গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রেও এ টিকা উচ্চমাত্রায় কার্যকর।

এই বছরের জুন মাস নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রকে ১০ কোটি টিকার ডোজ দিতে সম্মত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডাও এই টিকার জন্য চাহিদা জানিয়েছে। পাশাপাশি দরিদ্র দেশগুলোকে দেয়ার জন্য যে কোভ্যাক্স প্রকল্প নেয়া হয়েছে, সেই প্রকল্পে ৫০ কোটি টিকা কেনার চাহিদা দিয়েছে।

এই টিকার অনুমোদনকে স্বাগত জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, সব আমেরিকানের জন্য এটা একটা চমৎকার সংবাদ ও উৎসাহব্যঞ্জক অগ্রগতি'। সেইসাথে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে, লড়াই শেষ হতে এখনো অনেক বাকি।

তিনি আরো বলেন, এই টিকার অনুমোদন স্বাগত জানানোর পাশাপাশি আমি সব মার্কিন নাগরিকের প্রতি অনুরোধ করবো, তারা যেন নিয়মিত হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা আর মাস্ক পরা অব্যাহত রাখে। আমি আগেও অনেকবার যেমন বলেছি, ভাইরাসের নতুন ধরনের কারণে পরিস্থিতি আবারো খারাপ হয়ে উঠতে পারে ও বর্তমান অগ্রগতি পাল্টেও যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে এই টিকার যে পরীক্ষা চালানো হয়েছে, তাতে দেখা গেছে- টিকাটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ঠেকাতে ৮৫ শতাংশের বেশি সক্ষম। কিন্তু সাধারণ অসুস্থতা ঠেকাতে এটির সক্ষমতার হার ৬৬ শতাংশ। তবে যারা টিকা নিয়েছেন, তাদের কারো মৃত্যু হয়নি এবং টিকা নেয়ার পরবর্তী ২৮ দিনের মধ্যে কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করাতেও হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে চালানো জনসনের টিকার ট্রায়ালে (মানবদেহে পরীক্ষা) দেখা গেছে, করোনার তীব্র সংক্রমণে এটি উচ্চমাত্রায় একই রকম কার্যকর। তবে সার্বিকভাবে সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে এটি কম কার্যকর হয়েছে। দেশ দুটিতে ভাইরাসের নতুন ধরনগুলোকে প্রভাব বিস্তারকারীর ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে।

এছাড়া জরুরি ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য এই টিকার অনুমোদন দিয়েছে বাহরাইন। কারণ ফাইজার বা মর্ডানার তুলনায় এই টিকার ডোজের সংখ্যা কম। সেই সাথে টিকা দেয়ার অ্যাপয়েন্টমেন্ট বা স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যাও কম লাগে। সংরক্ষণ করাও তুলনামূলক সহজ। -বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //