ক্যাপিটল হিলে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলো হামলাকারীরা

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে গত ৬ জানুয়ারির হামলার আগে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিনিয়র কর্মকর্তারা ওই হামলার জন্য গোয়েন্দা ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন।

সিনেট কমিটিতে সাক্ষ্য দেয়ার সময় তারা বলেন, দাঙ্গাকারীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলো।

সাবেক ড্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পপন্থী বিক্ষোভকারীদের কংগ্রেস ভবনে ওই হামলার ঘটনায় অন্তত চারজন নিহত হয়। ওই হামলার পর পদত্যাগ করা চার কর্মকর্তার মধ্যে তিনজন গতকাল মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স কমিটিতে সাক্ষ্য দেন।

ওয়াশিংটন ডিসি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত প্রধান রবার্ট কোন্তে আইনপ্রণেতাদের বলেছেন, দাঙ্গাকারীদের দমনে পেন্টাগন থেকে ন্যাশনাল গার্ড ট্রুপস মোতায়েনে এত বেশি সময় লেগেছিলো যা তাকে বিস্মিত করেছে।

ক্যাপিটল পুলিশের সাবেক প্রধান স্টিভেন সান্ড বলেছেন, ক্যাপিটল হিল থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দূরে রাখার জন্য পাইপ বোমা রাখা হয়েছিলো। দাঙ্গাকারী গ্রুপ যখন যখন সিকিউরিটি এরিয়ায় আসে তারা অন্য সাধারণ প্রতিবাদকারীদের মতো করে আসেনি। এটি আর কখনোই দেখিনি আমি। ফেডারেল এজেন্সিগুলোর মধ্যে সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি ছিলো।

ক্যাপিটল পুলিশ ক্যাপ্টেন কারনেসা মেনডজা কমিটিতে বলেন, তার মুখে রাসায়নিক দ্রব্য ছুড়েছিলো হামলাকারীরা যা থেকে এখনো তিনি সেরে ওঠেননি।

তিনি বলেন, এক সাথে এতোকিছু হয়েছে যে আমার ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে এটিই ছিলো সবচেয়ে ভয়াবহ। নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে আরো অন্তত ১০ গুণ লোকবল থাকা দরকার ছিলো।

এই কর্মকর্তা আরো বলেন, এফবিআই রিপোর্টে হামলাকারীদের যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা বলা হলেও সেটি হামলার আগে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার কাছে পৌঁছায়নি।

আর কর্মকর্তারা মিলিটারি ট্রুপস চাননি এমন রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেন সাবেক সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস পল ইরভিং।

সাবেক সিনেট সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস মাইকেল স্টেনজার বলেন, আমরা সবাই একমত যে ইন্টেলিজেন্স সাপোর্ট পাওয়া যায়নি।

সিনেটর আমি ক্লবুচার জানিয়েছেন, ন্যাশনাল গার্ড ট্রুপস ডাকার বিষয়ে আগামী সপ্তাহে পেন্টাগন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য দিতে ডাকা হবে।

ট্রাম্পের কয়েক হাজার সমর্থক দেশটির ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কংগ্রেস ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়তে সক্ষম হয়েছিলো। তখন নির্বাচিত আইনপ্রণেতারা সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয়কে অনুমোদন করার জন্য জড়ো হয়েছিলেন।

সহিংসতার যেসব ছবি ও ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে- সেগুলোতে দেখা যায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উন্মত্ত সমর্থকরা ক্যাপিটল হিলের ভেতরে ঢুকে সেখানে ঘুরে ঘুরে কতোটা তাণ্ডব চালাতে সক্ষম হয়েছে। তারা ভবনের ভেতরে ভাঙচুর চালাচ্ছে, ছবি তুলছে, এমনকি অনেকে তাদের এই তাণ্ডবলীলা সোশ্যাল মিডিয়াতেও সরাসরি সম্প্রচার করেছে। অনেকে ভবনের ভেতর থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে- যেগুলোকে মার্কিন গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

টেলিভিশনে ও অনলাইন মিডিয়াতে এই হামলার খবর সারা বিশ্বে প্রচার হওয়ার সাথে সাথে অনেকেই সেখানে মোতায়েন থাকা ক্যাপিটল পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ভবনটির নিরাপত্তার জন্যে সেখানে প্রায় দুই হাজার সদস্যের একটি বাহিনী ক্যাপিটল পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়। -বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //