এখনকার গানগুলো সিনেমার মনে হয় না: দিনাত জাহান মুন্নী

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নী। সমসাময়িক বিষয় ও নিজের ব্যস্ততা নিয়ে সাম্প্রতিক দেশকালের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মোহাম্মদ তারেক।

গানের ব্যস্ততা কেমন চলছে?

একক রেকর্ডিংয়ের কাজ করছি। প্রায় সকলের সঙ্গে কাজ হচ্ছে। যাদের সঙ্গে আগে কাজ করা হয়নি, তাদের সঙ্গে করোনা-পরবর্তী সময়ে কাজ করছি। একসময় আমিও নতুন ছিলাম। বড়রা আমাকে সুযোগ করে দিয়েছেন। সে জায়গা থেকে নতুন সুরকার ও শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করছি। এমন প্রায় অর্ধশত গান গাওয়া হয়েছে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে একুশে টেলিভিশনের বিশেষ সংগীত অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেছি। অনুষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানেও আমি ছিলাম।  

ক্যারিয়ারের শুরুতে গুণী সংগীতজ্ঞদের পেয়েছিলেন। এখন নতুনদের সঙ্গে কাজ করলেন। তাদের মান কেমন দেখছেন?

আমি সবসময় ইতিবাচক। এখন যারা কাজ করছে তারা ভালো করছে। কারও কারও গান গাওয়ার সময় গুনগুন করি। আবার কারও কারও গান গেয়ে আসার পর ভুলে যাই। এখন তো বলা যাবে না, একটা সময়  গেলে বলা যাবে কারা কেমন।

চলতি সময়ের অধিকাংশ গানই প্রকাশের কিছুদিন পর শ্রোতারা ভুলে যায়। অথচ অনেক পুরনো বাংলা গান আছে যেগুলো এখনো মানুষ গুনগুন করে গায়। এমন কেন হচ্ছে?

বাজার প্রক্রিয়ার কারণে এমনটি হচ্ছে। আগে আমরা সংগীতা, সাউন্ডটেক, সিএমভি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে  যোগাযোগ করতাম। তারা অ্যালবাম প্রকাশ করত। একটা মান বজায় থাকত। এখন যে যখন চায়, গান প্রকাশ করতে পারে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভালো-মন্দের মান নির্ণয় করা যাচ্ছে না। তবে ভালো গান অনেকসময় ঠিকই শ্রোতাপ্রিয় হচ্ছে। এটাও প্রশ্নবিদ্ধ কারণ বুস্টিং করে গান হিট করার প্রবণতা আছে। 

আপনি একজন শ্রোতাপ্রিয় প্লেব্যাক শিল্পী। নব্বইয়ের দশক থেকে সিনেমার গানে কণ্ঠ দিচ্ছেন।  সে সময়ের সঙ্গে এ সময়ের কী কী পার্থক্য চোখে পড়ে?

আমি শওকত আলী ইমন, আলাউদ্দিন আলী, আলম খান, আলী হোসেন, ইমন সাহা, আলী আকরাম শুভ, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল প্রমুখের সঙ্গে প্লেব্যাক শুরু করি। দুঃখজনক হলেও বলতে হয়, এখনকার কাজগুলো ফিল্মের বলে মনে হয় না। অডিও অ্যালবামের গানের সঙ্গে ফিল্মের গানের কোনো পার্থক্য  দেখি না। অথচ আমরা ১৫-২০ জন মানুষ মিলে সিকোয়েন্স ধরে ধরে গান করতাম। একেকটি গানের  পেছনে প্রচুর সময় দিতাম। 

আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে। ওখানে মৌলিক গানও প্রকাশ করেছিলেন। সেটি নিয়ে কী ভাবছেন?

ইউটিউবে গান প্রকাশ করার জন্য প্রচুর সময় ও শ্রম দিতে হয়। সবকিছু সামলে যা দেওয়া আমার জন্য কষ্টকর। ইউটিউব নিয়ে পড়ে থাকলে গান গাইব কখন? তা ছাড়া ইউটিউবের বিষয়টি খুব একটা বোধগম্য নয়। আমার গানগুলোর স্বত্ব যাদের গান তাদের দিয়ে দিয়েছি। তারা নিজেদের ইউটিউবে ওগুলো চালিয়ে আয় করছে। কখনো ভাবিনি গান গেয়ে অর্থ উপার্জন করব। পাঁচবার শিশুশিল্পী হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পেয়েছি। টাকার কথা ভাবিনি। আর ইউটিউব তো এ সময়ের ব্যাপার।

কিছুদিন উপস্থাপনা করেছেন?

প্রায় এক মাস যাবত করছি না। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া। প্রায় সপ্তাহ দুয়েক আগে ঘোষণা দিয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছি। কারণ তখন বাসায় করোনায় আক্রান্ত রোগী ছিল। আমি চাই না আমার জন্য কেউ আক্রান্ত হোক। শুধু উপস্থাপনা নয়। সব কাজই স্থগিত রেখেছি।

সম্প্রতি অভিনয় শিল্পীদের কয়েকটি সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগীত শিল্পীদের এমন কিছু হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন?

আমার মনে হয় শিল্পীরা স্বাধীনসত্তার মানুষ। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে ভালোবাসে। আমরা আবেগী। অপরের অধীনে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে পারবে না অনেকে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //