ভালো শিল্পী হতে চাই, বড় শিল্পী নয়: হিমাদ্রিতা পর্ণা

হিমাদ্রিতা পর্ণা এ সময়ের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। ক্যারিয়ারের নানান প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন সাম্প্রতিক দেশকালের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারিহা জান্নাত।

এখন কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন?

খুব ব্যস্ত সময় পার করছি। প্রতিদিনই কোনো না কোনো বেসরকারি টিভি চ্যানেলের লাইভ শো ও সেলিব্রিটি শো থাকে। এছাড়া গানের রেকর্ডিংতো আছেই।

গানের শুরু কবে থেকে?

গান আমার রক্তে আছে, কারণ আমি সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি, বাবা-দাদা তবলা বাজাতেন, এখনো আমার বাবার তবলা বাজানোর শব্দ শুনে ঘুম ভাঙে, মা-বাবা ছোট থেকেই চেয়েছিল শিল্পী হবো, আর সেটুকুই চেষ্টা করছি মাত্র। 

কোন ধরনের গান করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?

আমি আসলে আধুনিক, মেলোডি, ক্ল্যাসিক্যাল, সেমি ক্ল্যাসিক্যাল গাইতে খুব পছন্দ করি, গাইবার চেষ্টা করি। আমি এখনো নিজের জন্যই গাই, আমার ভালো লাগে। গান আমার নেশা। আধুনিক ও সেমি ক্ল্যাসিক্যাল গানগুলো গাইতে বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করি। তবে যখন এসব গাই তখন অনেক প্রশংসা পাই।

সাম্প্রতিক সময়ে গানের কথা, সুর শ্রোতাদের টানতে পারছে না এই সম্পর্কে মন্তব্য কী? 

আসলে এই সময়ে আগের মতো অভিজ্ঞ লেখক, সুরকার আর নেই, তাদের মনোযোগটিও নেই, সবাই এখন সেলিব্রেটি হতে চায়, কোনো কাজকে গুরুত্ব দিয়ে সময় নিয়ে সাজিয়ে করার মতো মন নেই, সব কাজ ঠুনকো করে ফেলে, আবার পজিটিভলি বলতে গেলে এখনো হাতে গোনা কয়েকজন আছেন যারা খুব ভালো কাজ করছেন, বেশ ভালো সুর, কথা, একবার শুনলেই ভালো লাগছে। সেরকম গানও হচ্ছে বছরে কয়েকটি।

মিউজিক ভিডিওর প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা গানের জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ?

আসলে মিউজিক ভিডিও হচ্ছে সেটা খুবই ভালো বিষয়, তবে তাই বলে তার কোনো মান থাকবে না, কোনো মাধুরতা থাকবে না, ভিডিওর মধ্যে মন দিতে পারবে না শ্রোতারা সেটি তো হতে পারেনা। ভালো ভিডিও বানাতে হবে, ভালো কথা, সুর থাকতে হবে, তবেই তো সার্থক। নিজের সন্তানের মতো করে একটি মিউজিক ভিডিও লালন করতে হয়, যাতে শ্রোতারা শিল্পীকে বুঝে নিতে পারে, তা না হলে মিউজিক ভিডিওর কোনো মানে হয় না। ভালো সুর ভালো কথা, ভালো শিল্পী হলে নিশ্চয় ভালো কিছু হবে। তাই অবশ্যই আমি ভালোর পক্ষে, যে কোনো কিছুই ভালো হলে সেটির গুরুত্ব সবসময়ই থেকে যায়।

আমাদের দেশের সংগীতাঙ্গন নানা ধরনের সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, উত্তরণের পথ কী?

এই বিষয়টি নিয়ে বেশি কিছুই বলতে চাই না, কারণ সমস্যাটি পুরো বিশ্বে হয়েছে, এখনো সেই সমস্যা চলছে। কিছুই এখনো ঠিক হয়ে ওঠেনি। সময়ের ওপর ছেড়ে দিতে হবে, সময় নিশ্চয় আলোর পথ দেখাবে। এছাড়াও অনেক সমস্যার যেমন সৃষ্টি হয় তেমন শেষ ও হয়ে যায়, এই সংকটের থেকে উত্তরণের পথ একটিই সত্যের পথে চলা, সৎ পথে চলা।

চলচ্চিত্রে গান করা নিয়ে পরিকল্পনা কী?

চলচিত্রে গান গাইবার অনেক অফার পাই; কিন্তু ভালো সুর, কথা পেলে অবশ্যই সামনে আমাকে প্লে-ব্যাকে দেখা যাবে।

পাঁচ বছর পর আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

এই কথা আসলে একদমই বলতে পারছি না, কারণ সামনের ৫ বছর বেঁচে থাকব কিনা তারই কোনো ঠিক নেই, ২০২০ এর জানুয়ারিতে আমি চারটি বড় বড় কনসার্ট করে এসেছি সিঙ্গাপুরে আর বাংলাদেশে এসেই লকডাউনে পড়ে গিয়েছিলাম, এখনো আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারিনি। তাহলে কি করে ৫ বছর পরের কথা বলতে পারি? তাই এইটুকু বলতে পারি... ৫ বছর পর যদি ঈশ্বর বাঁচিয়ে রাখেন তাহলে ভালো শিল্পী হতে চাই, বড় শিল্পী নয়।