বাগদাদে কাতাইব হিজবুল্লাহ শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ৩

ইরাকের রাজধানী বাগদাদে স্থানীয় সময় বুধবার রাতে মার্কিন বাহিনী ড্রোন হামলায় ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সিনিয়র কমান্ডার আবু বাকির আল-সা’দি এবং আকরান আলায়েভি নিহত হয়েছেন। নিহত ওই কমান্ডার কাতাইব হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর নেতা ছিলেন বলে জানা গেছে। এ সময় ড্রোন হামলায় তার দুজন রক্ষী নিহতের খবরও পাওয়া গেছে। মার্কিন কর্মকর্তারা একথা জানিয়েছেন। ইরাকের রাজধানী বাগদাদের পূর্বাঞ্চলে চলন্ত একটি গাড়ির ওপর ড্রোন হামলার সময় দু’জন দেহরক্ষীসহ কাতাইব হিজবুল্লাহর নেতারা গাড়িতে অবস্থান করছিলেন। হামলায় গাড়িতে থাকা সবাই নিহত হয়েছেন বলে ইরাকি গণমাধ্যম জানিয়েছে। 

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আবু বাকির আল-সা’দি গোষ্ঠীটির সিনিয়র কমান্ডার হিসেবে সুপরিচিত। তিনি সংগঠনটির ড্রোন কর্মসূচির দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এদিকে ইরাকি মিলিশিয়ারা যুক্তরাষ্ট্রের বুধবারের এই হামলার প্রতিশোধ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালে কাতাইব হিজবুল্লাহর অন্যতম শীর্ষ নেতা আবু মেহদি আল-মুহান্দিস মার্কিন হামলায় নিহত হওয়ার পর আল-সা’দি হলেন মার্কিন বাহিনীর হাতে নিহত সবচেয়ে সিনিয়র নেতা। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে ড্রোন হামলায় ইরানে জেনারেল কাসেম সোলায়মানিকে হত্যা করা হয়। আর সেই হামলায় তার সঙ্গে আল-মুহান্দিসও নিহত হন।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, এই অঞ্চলে আমেরিকান বাহিনীর ওপর হামলা পরিচালনার জন্য কমান্ডার আল-সা’দি দায়ী ছিলেন। এছাড়া সম্প্রতি জর্ডানে মার্কিন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার সাথে এই মিলিশিয়া গোষ্ঠীটি জড়িত বলে অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত মাসের সেই হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহতের পাশপাশি ৪০ জন আহত হন। আর ওই হামলার পর কাতাইব হিজবুল্লাহ বলেছিল, ইরাক সরকারের ‘বিব্রত’ হওয়া রোধ করতে তারা আমেরিকান সৈন্যদের ওপর হামলা স্থগিত করছে।

এদিকে বুধবার রাতের এই ড্রোন হামলার পর বাগদাদের মাশতাল এলাকার আশপাশেও কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে। মূলত ব্যস্ত রাস্তায় একটি চলন্ত গাড়ির ওপর এই হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী আর এতে করে গাড়িটি জ্বলন্ত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। 

মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) বলেছে, ‘বাগদাদে ড্রোন হামলা এ অঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলার সরাসরি পরিকল্পনা ও অংশ নেওয়ার জন্য দায়ী কমান্ডারকে’ হত্যা করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি মার্কিন সেনাদের ওপর মারাত্মক ড্রোন হামলার প্রতিশোধ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র-সিরিয়া ও ইরাকে শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর কয়েকদিন পর এমন  অভিযান চালানো হয়। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত শুক্রবারের সেই হামলাকে মার্কিন প্রতিক্রিয়া বা জবাবের সূচনা বলে বর্ণনা করেছিলেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর পর থেকে মার্কিন বাহিনী প্রায় প্রতিদিনই রকেট এবং ড্রোন হামলার শিকার হচ্ছে। 

সূত্র : আল-আরাবিয়া, বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //