আইসিসি’র কাছে ইসরায়েলিদের যুদ্ধাপরাধের তদন্ত চায় বাংলাদেশসহ ৫ দেশ

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ পাঁচটি দেশ ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ইসরায়েলিদের বর্বর নৃশংস হামলার বিষয়ে এবারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তদন্তের দাবি জানিয়েছে। শুক্রবার দেশগুলো চলমান গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ ইস্যুতে এ দাবি জানান। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি করিম খান তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

৭ অক্টোবরে হামাসের হামলার পর ইসরাইয়েলের বেশ কয়েকটি পরিবার হামাসের হাতে জিম্মি অবস্থায় রয়েছে। আর এ বিষয়েও আইসিসি’র কাছে তদন্তের আহবান জানানো হয়েছে। 

চীফ প্রসিকিউটর করিম খান বলেন, আইসিসির সদস্যভূক্ত দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, বলিভিয়া, কমোরোস, জিবুতি যৌথভাবে ফিলিস্তিনের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে এই তদন্তের আবেদন জানিয়েছে। 

তিনি বলেন, গাজা উপতক্যা ও এর পশ্চিমতীরে ২০২১ সালের মার্চ হতে চলে আসা ইসরায়েলি দখলদারিত্বসহ পর্যায়ক্রমে বেড়ে ওঠা সংঘাত ও সংঘর্ষের জেরেই ২০২৩ সালের অক্টোবরে এমন যুদ্ধের সৃষ্টি করেছে আর এ বিষয়টিও তদন্তে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানানো হয়। 

করিম খান আরও বলেন, সম্প্রতি আমার পাঠানো একটি প্রতিনিধি দল গাজা ও মিশর সীমান্ত ঘুরে এসেছে। আমার দল সেখান হতে যুদ্ধের তাৎপর্যপূর্ণ সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। 

তিনি আরও সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহের কথা জানিয়ে বলেন, আমি এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব। প্রয়োজনে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে গিয়ে বেঁচে যাওয়া মানুষ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের কাছ হতে প্রকৃত ঘটনা শুনব। 

এসময় তিনি ইসরায়েল আইসিসি’র সদস্যভূক্ত দেশ নয় উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করেন। 

করিম খান আরও জানিয়েছেন, ২০০২ সালে যে রোমান সংবিধির ওপর ভিত্তি করে আইসিসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা অনুযায়ী কোনো সদস্য রাষ্ট্র যদি বাইরের কোনো রাষ্ট্রের হামলার শিকার হয় ও ওই হামলাকারী রাষ্ট্র যদি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সনদে স্বাক্ষরকারী কিংবা স্বীকৃতি দানকারী দেশ না-ও হয়, তবে ওই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারবে আইসিসি।

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা বলছে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি আইসিসি জরুরিভিত্তিতে নিয়ে তা সমাধান করবে বলে আশা করছে তারা।

এর আগে ২০১৪ সালের ১৩ জুন থেকেই  ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নিয়ে একটি তদন্ত চালিয়ে আসছে আইসিসি। এছাড়াও ২০২১ সাল হতে ফিলিস্তিনের হামাস, ইসরায়েল বাহিনী ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে আইসিসি।  

এদিকে ইসরায়েল ৭ অক্টোবরের হামলায় হামাসের হাতে ২৩৯ জন বিদেশি নাগরিক জিম্মি রয়েছে বলে জানিয়েছে। এছাড়াও তাদের দেশের ১২০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলায় এ পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ গাজার ১২ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। 

তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, আন্তর্জাতাইক অপরাধ আদালতে হামাস ও ইসরায়েল উভয়ের জন্যই যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //