আদরের বিড়ালের যত্ন-আত্তি

বিড়াল এমন একটি প্রাণী যা কম বেশি সব ধরনের মানুষই পছন্দ করেন। গ্রামে ছিন্নমূলভাবে বিড়ালের আনাগোনা বেশি; তবে এই প্রাণীটি বাড়িতে পোষার অভ্যাস বেশি দেখা যায়  শহরে। অনেকে আদর করে নানান নামে ডাকেন। সঙ্গে নিয়ে ঘুরতেও যান। 

দেশি-বিদেশি সব জাতের বিড়ালেরই যত্ন নিতে হয় নিয়ম মেপে। যারা বিড়াল পুষতে চান, কিংবা বিড়াল ভালোবাসেন তাদের এ কথা সবার আগে মাথায় রাখা জরুরি।

বিড়ালের খাদ্যভ্যাস,পরিচ্ছন্নতা, থাকার জায়গা, চিকিৎসা সব দিক থেকেই রাখতে হয় বিশেষ নজর। তবে দেশি বিড়ালের চেয়ে বিদেশি বিড়ালের যত্ন বেশি প্রয়োজন হয়। তার প্রধান কারণ হচ্ছে দেশের আবহাওয়া। এই বিড়ালগুলোর ঠিক মতো যত্ন না নিলে খুব তাড়াতাড়ি এরা আসুস্থ হয়ে পড়ে এবং মারা যায়।

খাবারঃ বিড়াল মাংসাশী প্রাণী, মাংস জাতীয় খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে। মুরগির মাংস, মাছ, কলিজা এই সব খাবার মশলা ছাড়া সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে হালকা সিদ্ধ করে খাওয়াতে হবে। 

কোনভাবে কাঁচা অবস্থায় খাবার দেওয়া যাবে না। এছাড়া ডিম, সবজি সেদ্ধ (কুমড়া, লাউ, শসা, মটর, গাজর, শিমের বিচি, ব্রকলি, মিষ্টিআলু), সেদ্ধ ভুট্টা, সেদ্ধ গম, কলা, বিচি ছাড়া তরমুজ, ব্লু-বেরি, হার্ড চিজ, কটেজ চিজ, দই দিতে পারেন।

কিছু খাবার কখনোই দেওয়া উচিত নয়, তা হলো- পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা প্রাণিজ পণ্য, আঙুর, চকলেট, চা, কফি, চিনি, অ্যালকোহল দেবেন না। সম্ভব হলে শর্করাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। চিংড়ি বা রেড মিটে অ্যালার্জি থাকতে পারে অনেক বিড়ালের সে ক্ষেত্রে না খাওয়ানো উত্তম। 

বিড়ালের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার ক্ষেত্রে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো উচিত। অবশ্যই বাইরের খাবার খাওয়ানোর আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে  হবে। বিড়ালের জন্য পরিষ্কার পানির ব্যবস্থা রাখুন। 

থাকার জায়গাঃ বিশ্রাম নেবার সময় বিড়াল সাধারণত সুন্দর, পরিপাটি ও পরিষ্কার স্থানে মাথা রাখতে বা ঘুমাতে পছন্দ করে। বিশ্রামের স্থান অবশ্যই এমন স্থানে হওয়া চাই যেখানে হইচই বা কোনো শব্দ নেই যা বিড়ালের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

বিড়াল ঘুম থেকে জেগে ওঠানো পছন্দ করে না। আপনি নিজের বিছানাতেই আপনার বিড়ালটির শোবার ব্যবস্থা করতে পারেন। এ জন্য একটি আলাদা কম্বল কেনা যেতে পারে। এছাড়া বিড়ালের জন্য আলাদা ছোট একটি ঘর কিনতে পারেন।বিড়ালের প্রস্রাব-পায়খানার স্থান পরিষ্কার রাখতে হবে বা বাথরুমে প্রস্রাব- পায়খানা করানো অভ্যাস করাতে হবে।  

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাঃ বিড়াল এমনিতেই বেশ পরিচ্ছন্ন প্রাণী। বিড়াল সারা দিনের বেশির ভাগ সময়ই ঘুমিয়ে কাটায়, আর জেগে থাকা সময়টুকুর অর্ধেক ব্যয় করে নিজের পরিচ্ছন্নতার পেছনে। 

বিড়ালকে সপ্তাহে একবার করে গোসল করাতে হবে। বিশেষ শ্যাম্পু কিনতে পাওয়া যায়, তা ব্যবহার করুন। গরমকালে নিয়ম করে গোসল করাতে হবে। তবে শীতের সময় এক মাস বিরতি দিয়ে গোসল করালেও ক্ষতি নেই। অনেকে বাসায় থাকা অন্য সদস্যদের কথা ভেবে বিড়ালের নখ কেটে দেন; কিন্তু বিড়ালের জন্য নখ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিড়ালের গায়ে উকুন থাকলে লেজের গোড়া বা পেটে চুলকানি হয়। সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।

চিকিৎসাঃ পোষা বিড়াল নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। তাই বয়স অনুযায়ী ভ্যাকসিনেশন করিয়ে নিন। জন্মের পর দুই মাস বয়স হলেই বিড়ালকে জীবাণু সংক্রমণরোধী টিকা দিন। তিন মাস পূর্ণ হলে জলাতঙ্কের টিকা দিন। এছাড়াও বিড়ালকে তিন মাস পরপর কৃমির ওষুধ খাওয়ানো জরুরি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //