কর্মদক্ষতা বাড়াতে করণীয়

ব্যস্ততায় ভরা জীবনে পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের সমন্বয় করা কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। হয়তো আপনার মিটিংয়ে পৌঁছতে দেরি হয়ে যেতে পারে, হয়তো কোনো বেলার খাবার বাদ দিতে হতে পারে, সারাদিনে একবারও প্রিয়জনের খবর নেওয়ার সুযোগ নাও হতে পারে।

কিন্তু এই ব্যস্ততা সবচেয়ে ক্ষতি করে কর্মদক্ষতার। এটি অতিরিক্ত চাপ ও উদ্বেগে ফেলে দিতে পারে। তাই জেনে নিন এমন কিছু বিষয়ে, যেগুলো আপনার কর্মদক্ষতাকে বাড়িয়ে দেবে, শত ব্যস্ততায়ও আর চাপ অনুভব করবেন না-

যখনকার কাজ তখনই করুন: যখনই কোনো কাজ করার প্রয়োজন হবে, তখনই করে ফেলুন। মনে মনে একটি সময় বেঁধে নিন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করুন। কাজের সময়সীমা নির্দিষ্ট থাকলে সেটি দ্রুত ও সঠিকভাবে শেষ করার তাড়া থাকে।

শিডিউল মেনে চলুন: কোনোকিছু গোছানো মানেই অনেকটা এগিয়ে থাকা। তাই প্রতিদিনের কাজগুলোকে সময় ও গুরুত্ব অনুসারে সাজিয়ে নিন। সময়গুলো ভাগ করে নিন। নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কাজ করুন। যখন আপনার একটি গোছানো শিডিউল থাকবে তখন সহজেই সেই সময়সূচি মেনে চলতে পারবেন। একটি লক্ষ্য ঠিক করুন এবং সেদিকেই এগিয়ে যান।

একসঙ্গে অনেক কাজ করবেন না: মাল্টি-টাস্কার হওয়ার চেষ্টা করবেন না। এটি আপনার কর্মদক্ষতা বাড়াবে না, বরং কমিয়ে দেবে। তাই একবারে একটি কাজের ওপর ফোকাস করা উচিত। এই অভ্যাস আপনাকে নির্দিষ্ট বিষয়ে আরও দক্ষ করে তুলবে। একসঙ্গে অনেক কাজ করতে গেলে কোনো কাজই ভালোভাবে সম্পন্ন হবে না এবং সেটি সম্ভবও নয়। 

ফোন সাইলেন্ট মোডে রাখুন: একথা সবাই স্বীকার করবেন যে, ফোন থেকে দূরে থাকা সত্যিই কঠিন। কারণ আজকাল আমাদের অনেক কিছুই ফোনের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু যত বেশি সময় আপনার ফোন সাইলেন্ট মোডে রাখবেন, কাজে তত বেশি মনোযোগী হবেন। 

অপছন্দের কাজটি দিনের শুরুতে করুন: এটি অনেকের কাছেই যুক্তিসঙ্গত সমাধান বলে মনে নাও হতে পারে। তবে যে কাজটি আপনি করতে খুব একটা পছন্দ করছেন না, কিন্তু না করেও উপায় নেই, সেটি সম্পন্ন করার জন্য দিনের শুরুটাই সঠিক সময়। আপনি যদি কাজটি দিনের পর দিন ফেলে রাখেন তবে কেবল বিলম্বই হবে। 

অবসর সময়ে অফিসের কাজ নয়: কর্মীদের সবচেয়ে বড় ভুলগুলোর মধ্যে একটি হলো, তাদের অবসর সময়ে অফিসিয়াল ইমেইলের উত্তর দেওয়া। এটি তাদের ছুটির সময় উপভোগ করাকেও কঠিন করে তোলে। যে কারণে বেশিরভাগ সময় তারা অবসর পেলেও বিরক্ত থাকে এবং মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে।

পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস করুন: ঘুম মানসিকভাবে শান্ত ও প্রস্তুত থাকার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেকথা সবারই জানা। শরীর ও মনকে জেগে থাকার জন্য জোর করবেন না। ঘুমের একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন। প্রতি রাতে অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুমের অভ্যাস করুন। একবার আপনি একটি স্বাস্থ্যকর ঘুমের চক্র ধরে ফেললে, কত দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারেন তার পার্থক্য দেখতে পাবেন।

গুরুত্বপূর্ণ কাজের সময় ঠিক করুন: গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য কিছুটা সময় আলাদা করে রাখলে আপনি একটি একক কাজে নিখুঁতভাবে ফোকাস করতে পারবেন। ধরুন আপনি দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সমাধান করার জন্য বিকেল ৪টা থেকে ৫টা ঠিক করেছেন। এসময় আপনি অন্য কারও সঙ্গে কথা বলতে বা অন্য কোনো কাজ করতে পারবেন না। এটি আপনার কর্মদক্ষতার জন্য বিস্ময়করভাবে কাজ করবে।

মন ও শরীরকে প্রস্তুত রাখা: নিজের শক্তি ও স্বাস্থ্যকে নিয়মের মধ্যে আনতে হলে সময়কেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে হবে। এজন্য কয়েকটি কাজ করতে হবে। যেমন কাজের দক্ষতা বাড়াতে ব্যায়ামের একটি ভালো সম্পর্ক আছে। নতুন নতুন ধারণা পেতে আপনার কাজের সঙ্গে সম্পর্কহীন এমন একটি ক্ষেত্র বেছে নিন, যেখানে বুদ্ধিভিত্তিক চিন্তা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানো যায়। একটা কাজ যেভাবে সাধারণত করেন, সেখান থেকে বেরিয়ে একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করলেও তা ভালো কাজ দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার ২০ শতাংশ পর্যন্ত কর্মদক্ষতা বাড়ায়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //