সতেজ ওয়াশরুম

আমাদের বাসার প্রত্যেকটি ঘর সুন্দর গোছানো থাকলেও, বেশিরভাগ সময়েই ওয়াশরুমের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে খুবই উদাসীন থাকি আমরা। অথচ একটি পরিবারের সুস্বাস্থ্য আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, নিরোগ জীবনের জন্য বাথরুম বা ওয়াশরুমের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া দরকার। শুনতে কঠিন মনে হলেও, পরিবারের সবাই মিলে বা সাহায্যকারীর সহায়তায় কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখলে আমরা সহজেই বাড়ির ওয়াশরুম পরিচ্ছন্ন ও সতেজ রাখতে পারি।

সঠিক ডিজাইন ও স্থাপত্য

নিজেদের বাড়ি হলে ওয়াশরুম তৈরি করার সময় এ ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে। ভাড়া বাড়ি বেছে নেওয়ার সময়েও দেখতে হবে যেন বাথরুমগুলো স্বাস্থ্যসম্মত হয়। প্রয়োজনে মেরামত করিয়ে নিতে হবে যেন পানি পড়া, দেয়াল বা ছাদে নোনা ধরা, টয়লেটটি ভাঙা বা ত্রুটিপূর্ণ না হয়। পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। দরকার হলে এগজস্ট ফ্যান লাগিয়ে নিতে হবে।

পর্যাপ্ত স্টোরেজ সুবিধা

ওয়াশরুমে টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, মাউথওয়াশ, সোপকেস, হ্যান্ডওয়াশ, শ্যাম্পু, ফেসওয়াশ কত কিছুই না দরকার হয়। আবার কাপড় ধোয়ার গুঁড়া সাবান, কাপড় কাচা সাবান এবং বাথরুম পরিষ্কার করার সামগ্রীও সেই বাথরুমেই রাখার প্রয়োজন হয়। সুবিধামতো বেসিনের ওপরে বা নিচে, পাশের দেয়ালে, ঝরণার এক পাশে খোলা ও বন্ধ দুই রকমেরই উপযুক্ত স্টোরেজের জায়গা থাকা উচিত। সুবিধামতো দেয়ালে হুক, টাওয়েল রেইল, তাক ঝুলিয়ে দেওয়া যায়। অনেক সময় বেসিনের আয়নাটি স্টোরেজ ক্যাবিনেটের দরজার ওপরেও বসানো থাকে। বন্ধ ক্যাবিনেটগুলো মাঝেমধ্যেই পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত।

কোনো রকম ময়লা না ফেলা

ওয়াশরুমের ভেতরে বা তা সম্ভব না হলে একেবারে দরজার বাইরেই ময়লা ফেলার ঝুড়ি থাকা উচিত। সাবান-শ্যাম্পুর খালি প্যাকেট বা বোতল, টুথপেস্টের খালি টিউব ইত্যাদি ওয়াশরুমে জমা হতে থাকলে, তা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করতে পারে। বেসিনে, মেঝের ড্রেনেজের ফুটোয় যেন চুল বা অন্যান্য ময়লা না জমে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। টয়লেটের কমোডে কোনো রকম অযাচিত আবর্জনা ফেলা যাবে না।

ওয়াশরুম জীবাণুমুক্তকরণ

অনেকে নিজের হাত ধোয়া, বাইরের কাপড় ধোয়া, যে কোনো রকমের জীবাণুমুক্ত করার কাজগুলো সব ওয়াশরুমেই করে থাকে। তাই সেখানকার মেঝে, ট্যাপ, সিংক, কমোড ভালোভাবে ডিশ ইনফেক্ট করার প্রয়োজনীয়তা এখন আরো বেশি দরকার। ডিটারজেন্ট পাউডারের পাশাপাশি বিভিন্ন উপযোগী জীবাণুনাশক দিয়ে ওয়াশরুমটি প্রায়ই পরিষ্কার করে নিতে হবে। কোণায় কোণায় বা কমোডের পেছনে, সিংকের নিচে যেন শেওলা, ছত্রাক না পড়ে, তা খেয়াল করতে হবে। মাকড়সা, তেলাপোকা ইত্যাদির উপদ্রব হলেও রোগজীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। তাই এ বিষয়েও ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্লিচিং পাউডার বা ঘরোয়া ব্লিচিং সলিউশন ব্যবহার করলে নিয়ম অনুযায়ী সঠিকভাবে পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে।

শুষ্ক রাখা

আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকলে সহজেই ওয়াশরুমটি শুকনো রাখা যায়। এগজস্ট ফ্যানের সাহায্যও নেওয়া যায়। এতে ওয়াশরুমের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা সহজ হয়। প্রয়োজনে ঘর মোছার মপ দিয়ে অতিরিক্ত পানি মুছে নিতে হবে। বাথরুমের কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না। বাথরুমের পর্দা পানিনিরোধক বা দ্রুত শুকিয়ে যায় এমন উপকরণ দিয়ে তৈরি করতে হবে। পানি ধরে রাখার দরকার পড়লে ঢাকনাযুক্ত বালতি ব্যবহার করতে হবে। এতে ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কাও কমে যাবে। কালেভদ্রে ব্যবহৃত বাথরুমটির হাইকমোড মাঝে-মধ্যে ফ্লাশ করে দিলে, সেখানকার পানিতে মশা বা পোকামাকড়, শেওলা ইত্যাদি জন্মাবে না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //