আতঙ্কে নয় আনন্দে থাকুন

বিভিন্ন দেশ কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন ও লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। সামাজিক জীব মানুষকে তার স্বভাবের বিপরীতে যেয়ে একা থাকতে হচ্ছে। বিশেষ করে আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে অন্তত এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোভিড-১৯ আক্রান্ত মায়ের থেকে কয়েক মিটার দূরত্বে দাঁড়িয়ে দশ বছরের শিশুকে কাঁদতে দেখি আমরা। দেখি মায়ের অসহায় ভেঙে পড়া। দূর থেকে আলিঙ্গনের বৃথা চেষ্টা। আবার মৃত ব্যক্তিকে নিঃসঙ্গ অবস্থায় সৎকার করতে দেখেও দীর্ঘশ্বাস ফেলছি আমরা। এসব দেখে দেখে বাড়ছে মনের ওপর চাপ।

মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতাই বোধ করি বিরুদ্ধ স্রোতের বিপরীতে চলা। একাকী বদ্ধ ঘরে থাকার বিষয়টা মেনে নেয়া কষ্টকর অনেকের জন্য। কিন্তু তবুও নিজেদের ও অন্যদের নিরাপত্তার জন্য এখন বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিন মেনে নিতে হচ্ছে আমাদের। এই সময়ে ইতিবাচক মানসিকতা ধরে রাখা মুশকিল। তবুও ইতিবাচকতাই পারে আমাদের দুঃসময় কাটাতে সাহায্য করতে। আসুন দেখে নেই বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ এই দুঃসময়ে কীভাবে ইতিবাচক মানসিকতা ধরে রাখতে পারি আমরা।

বাসায় কাটানো এই সময়টিও চাইলে অর্থবহ করে তোলা সম্ভব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও টেলিভিশনে বেশি সময় না কাটিয়ে নানা কাজে মনোযোগ দেওয়া যেতে পারে। নিজের কাজগুলো গুছিয়ে ফেলা যেতে পারে। আসুন দেখে নেই, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা এই সময়কে কাজে লাগাবেন কীভাবে-

শরীরচর্চা ঘরেই

এখন বাইরে গিয়ে ব্যায়াম করার বদলে ঘরেই সেরে ফেলতে পারেন। বাসায় অ্যারোবিক ব্যায়াম করা যেতে পারে। যেমন : জোরে হাঁটা, জগিং, দৌড়ানো, দড়ি লাফ ইত্যাদি হলো অ্যারোবিক ব্যায়াম। গবেষকদের মতে, সপ্তাহে ৩০০ মিনিট অ্যারোবিক ব্যায়াম করা যথেষ্ট। সেই হিসেবে, প্রতিদিন ৩০ মিনিট এই ব্যায়াম করা যেতে পারে।

অ্যারোবিক ব্যায়ামের ফলে শরীরে এন্ডোরফিন নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসরণ হয়, যার ফলে বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশন কমে যায়। অ্যারোবিক ব্যায়াম ওজন কমাতে ও হৃদপিন্ড সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

মন দিন শখের কাজে

প্রতিদিনের ব্যস্ততায় আমরা নিজের শখও ভুলে যেতে বসি। ছবি আঁকা, সেলাই করা, নতুন কিছু বানানো, রান্না করা- এই কাজগুলোতে মন দিতে পারেন। গাছের বিশেষ পরিচর্যা যেমন: আগাছা পরিষ্কার, সার দেওয়া, কীটনাশক স্প্রে ইত্যাদি কাজগুলো করতে পারেন। তাহলে সময়টা বেশ কেটে যাবে। একঘেঁয়েভাব দূর হবে।

বই পড়ুন

কিছুদিন আগেই বইমেলা শেষ হলো। মেলা থেকে কম-বেশি প্রায় প্রত্যেকেই পছন্দের বই কিনেছেন। কর্মব্যস্ততা থাকলে বই পড়ার সুযোগ পেতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। এই অবসরে বইগুলো আরাম করে পড়ে ফেলতে পারেন। চাইলে পছন্দের বই সম্পর্কে পর্যালোচনা বা রিভিউ লিখে ফেলতে পারেন।

সিনেমা দেখতে পারেন

এই সময় ভালো কিছু সিনেমা দেখার উপযুক্ত সময়। যে সিনেমাগুলো দেখতে চেয়েছেন কিন্তু সময়ের অভাবে পারেননি, সেগুলো এখন দেখে ফেলতে পারেন। আপনার সন্তানকেও এই সময় ভালো কিছু সিনেমা বা অনুষ্ঠান দেখাতে পারেন।

সিভি আপডেট করতে পারেন

সিভি আপডেট করা একেবারেই ছোট কাজ। তারপরও সময়ের অভাবে এ কাজটুকুও অনেকসময় করা হয় না। এই সুযোগে কাজটি করতে পারেন।

নিজের জন্য সময় রাখুন

দিন শেষে নিজের জন্যও সময় রাখতে হবে। নতুন কাজের পরিকল্পনা করতে হবে। যেসব কাজে সময়ের অভাবে এতদিন হাত দিতেই পারেননি সেগুলোর জন্য পরিকল্পনা করুন। পারলে কাজ শুরু করে দিন। লেখালেখির ইচ্ছা থাকলে এই সময়টি আপনার জন্য খুবই উপযুক্ত হবে।

এই সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়াই ভালো। ঘরে বসেই কাজে লাগান আপনার প্রতিটি মুহূর্তকে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //