সরকারি সম্পত্তির ব্যক্তিগত ব্যবহার বন্ধ হোক

প্রতিটি স্বাধীন রাষ্ট্রের আছে সরকারি সম্পত্তি। যা ব্যবহৃত হয় জনগণের কল্যাণে ও সরকারি কাজে। সরকারি সম্পত্তির গুলো হলো- বিদ্যালয়, হাসপাতাল, অফিস-আদালত, রাস্তাঘাট, ব্যাংক, গাড়ি, বাড়ি, খাল, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, বন ইত্যাদি। যা কেন্দ্রে থাকা রাষ্ট্রীয় প্রধান ধাপে ধাপে বিভিন্ন স্তরের সরকারি আমলাদের কাছে হস্তান্তর করে। অনেক সময়েই দেখা যায় সরকারি সম্পত্তিকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে। 

শ্রেণি কক্ষকে বাসাবাড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে। কখনো দেখা যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ লাইন নিজ বাসায় ব্যবহার করতে, আবার কখনো ব্যবসায়ী কাজে। প্রতিষ্ঠানের পাম্পের পানি বিক্রি করছে ব্যবসায়ীদের কাছে। বিভিন্ন কক্ষ প্রাইভেট শিক্ষককে ভাড়া দিচ্ছে।

এদিকে, হাসপাতালকে তৈরি করা হচ্ছে আড্ডা খানায়। সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে দেওয়া ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী ফার্মেসি গুলোতে। হাসপাতালে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারিরা মিলিত ভাবে ফার্মেসির মালিকের সাথে যুক্ত হয়ে অল্প টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছেন ওষুধ।

অফিস-আদালতের জন্য দেওয়া বিভিন্ন ভবন ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যক্তিগত কাজে। আবার অনেকেই রাস্তাঘাটের অর্ধেক দখল করে রেখেছেন নিজের ব্যবসায়ীক মালামাল। রাস্তায় বেরিকেট দিয়ে যান চলাচল ব্যাহত করে শুকাচ্ছে ধান, খড়, গাছের পাতা, লাকরি। খড় রাস্তার উপর দেওয়ায় রাস্তার ভাঙ্গা জায়গা দেখা যায় না এবং খড়ে চাকা পিছলে দুর্ঘটনার সৃষ্টি করে। মানুষের হাটা চলার জন্য নির্মিত ফুটপাত এখন হকারদের দখলে। হাটার কোনো পরিবেশ নেই। যার কারণে অধিকাংশ জায়গায় দেখা যায় মানুষকে প্রধান সড়কের মধ্য দিয়ে হাঁটাচলা করতে। যা সড়ক দুর্ঘটনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। রাস্তা পাড় হবার জন্য নির্মিত ফুট ওভারব্রিজও হকারদের দখলে। 

সরকারি কাজ পরিচালনার সুবিধার্থে সরকারি কর্মকর্তাদের দেওয়া হয় গাড়ি। যা সরকারি কাজের থেকে পারিবারিক কাজে ব্যবহার করা হয় বেশি। ছেলে মেয়েদের স্কুলে আনা-নএওয়া, স্ত্রী সহ পরিবারের সকলের শপিং করতে যাওয়া, ভ্রমনে যাওয়া, আত্মীয় স্বজনকে রিসিভ করা ইত্যাদি।

কৃষি কাজে সেচ দিতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পানির। যার জন্য খাল খনন করে নদী থেকে পানির যোগান দেওয়া হয়। সেই খালে অনেকেই সরকারি অনুমতি ছাড়া বাঁধ দিয়ে পানি ইচ্ছে মত ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। খাল থেকে ইচ্ছে মত মাটি কেটে নিয়ে নিজের বাড়ির কাজে ব্যবহার করেন। যার ফলে রাস্তা ভেঙ্গে খালে পতিত হচ্ছে।

নদ-নদী প্রকৃতির দান যা মূলত জনগণের কল্যাণে সরকারি কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু অনেকেই সেই নদী ভরাট করে যুগের পরে যুগ বসবাস করছেন। যার ফলে নদীর গতিপথ ব্যাহত হচ্ছে। নদী রুপ নিচ্ছে ভয়ানক। যার জন্য ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। 

পাহাড়-পর্বত, বন এগুলো সরকারি সম্পত্তি কিন্তু অনেকেই এগুলো কেটে বাড়ি নির্মাণ করছেন। অনেকেই বনের গাছ কেটে বিক্রি করছেন যা কখনো কাম্য নয়। তাই পরিশেষে বলতে চাই সরকারি সম্পত্তি যেন ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার না হয়। তার জন্য প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।

ইমন হাওলাদার
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //