চিঠির প্রচলন ও আবেগি ভাবনা

চিঠির প্রচলন কবে থেকে শুরু হয়েছিল তার কোনো নির্দিষ্ট দিন তারিখ ইতিহাসে লিপিবদ্ধ নেই। তবে চিঠি বিষয়টা নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। কারণ মনের জমানো অব্যক্ত কথা  নানা শঙ্কার কারণে অনেক সময় মুখে  প্রকাশ না করা গেলেও সেটি চিঠিতে লিখে সহজেই প্রকাশ করা যায়। এটি চিঠির আশ্চর্যজনক ক্ষমতা।

ধারণা করা হয়, প্রাচীন যুগ থেকেই চিঠির প্রচলন শুরু । তবে এই  সময়কাল নিয়ে অনেকের মাঝে মতানৈক্য আছে। প্রসিদ্ধ মতানুসারে, ৬৫০ খ্রি: থেকে ১২০০ খ্রি: পর্যন্ত সময়কে প্রাচীনযুগ ধরা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই যে মানুষ চিঠি আদান-প্রদান করতো তার কথা উল্লেখ আছে হোমার রচিত গ্ৰিক মহাকাব্য "ইলিয়াডে"। তখন চিঠি আদান-প্রদানে রূপকথার গল্পের মতো বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার হতো। আর চিঠি লেখা হতো গাছের বাকল, পাতায়, পশুর চামড়ায় এবং পাথরে খোদাই করে। 

বিশ্বে প্রথম সমুদ্রডাক চালু করা হয় ১৬৩৩ সালে। চিঠির সিন্ধু নামে পরিচিত "ডাকবাক্স" পদ্ধতি চালু হয় ১৮৫০ সাল থেকে। সুতরাং বলা যায় চিঠির ইতিহাস বেশ প্রসিদ্ধ। 

স্কুল জীবনে ইতিহাসের ছাত্র ছিলাম বিধায় অতীত নিয়ে গবেষণা করার ক্ষমতা আমার ঢের হয়ে গেছে ভাবতাম। কিন্ত অবাক করার মতো বিষয় হলো, চিঠির বিষয়ে আমি সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলাম না। সামান্য অভিমান করে গাল ফুলিয়ে বসে থাকলেও আমি চিঠিতে তা লিখে উঠতে পারি না। শিরশিরানি শীতের রাতের মতো বিষাদ বুকে নিয়ে কুঁচকে গেলেও নিজেকে মেলে ধরতে পারি না। আশ্চর্য এমন কেনো হয়! লিখতে লিখতে কন্ঠশিল্পী তিমির বিশ্বাসের "পাড় ভাঙা নদী" শিরোনামে গানের কথা খুব মনে পড়ছে!

"আমার পাড় ভাঙা এক নদী

আমি নৌকা হতাম যদি 

ভাসতে ভাসতে যেতাম তোমার কাছে!

আমার পথের পাশে ধূলো

আমার ঠিক নেই চাল চুলো

তুমি ফুল হয়ে যাও আমার দুঃখ গাছে!

ভাসতে ভাসতে আপনার কাছে যেতে না পারলেও, আপনার শহর ছুঁয়ে দেওয়ার খুব ইচ্ছে আমার। মান্না দের গানের স্মৃতি বিজড়িত কফি হাউজের কথা খুব মনে পড়ে। ইচ্ছে হয় কফির পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে "কফি হাউজের সেই আড্ডাটা" আবারও অনুভব করি।

ইচ্ছে হয় কলেজ স্ট্রিট কিংবা ন্যাশনাল লাইব্রেরীর সবগুলো বই আমার বুক শেলফে জমা করে রাখি। কিন্তু তা কী সম্ভব আমার পক্ষে? কুড়ি লক্ষ বই এবং পাঁচ লক্ষ্ পান্ডুলিপি- এ যে এক বিশাল ব্যাপার।

হুগলি নদীর উপর অবস্থিত রবীন্দ্র সেতুতে বসে ইচ্ছা হয় নির্মল একটা সন্ধ্যা উপভোগ করি। আসলে "আনন্দ নগরী" নামে খ্যাত বিশাল কলকাতা শহরের প্রেমে পড়ে আছি আগে থেকেই। কোনো এক সূদুর ভবিষ্যতে দোয়েল-কোয়েলের মতো স্বপ্নের শহর কলকাতায় উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়াবো একদিন। ততদিন সেই সুপ্ত ইচ্ছা বুকের কার্নিশে জমা হয়ে থাকুক।


ইতি,

নিলাদ্রিতা 

শিক্ষার্থী, ঢাকা। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //