সাক্ষ্যগ্রহণ বন্ধ চেয়ে ফের খালেদা জিয়ার আবেদন

নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতে নথি দেখে দেখে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেয়া বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ রবিবার (৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দায়ের করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। পরে আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, দেখে দেখে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হচ্ছে, যা ফৌজদারি আইনগতভাবে বৈধ নয়। নিয়ম হচ্ছে মেমোরি রিফ্রেশ করার জন্য সাক্ষ্য প্রদানকালে সাক্ষী দু’একবার চোখ বোলাতে পারেন। কিন্তু এভাবে লাগাতার দেখে দেখে বইয়ের মতো পড়ে পড়ে সাক্ষ্য প্রদান করা আইনসিদ্ধ নয়। 

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমরা মনে করছি, এ মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ করছেন। তিনি সেখানে গিয়ে নিজে বসে থাকছেন। এটা তার এখতিয়ার বহির্ভূত। 

আবেদনটি বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত ১৯ মার্চ নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান।

কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলার তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে সরকারে থাকাকালে বেগম জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেন।

খালেদা জিয়া ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও তৎকালীন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন মুখ্যসচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এর মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন এবং বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা গেছেন। তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অন্য আসামিদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন বর্তমানে কারাগারে আছেন। নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ পলাতক রয়েছেন। বাকিরা জামিনে আছেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //