তথ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ‘বিভ্রান্তিমূলক’ ভিডিও সরানোর নির্দেশ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে ইউটিউব ও ফেসবুকে থাকা ‘মানহানিকর’ ও ‘বিভ্রান্তিমূলক’ ভিডিও সরাতে বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার (২০ জুন) চট্টগ্রাম সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে বিচারক জহিরুল কবির এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদলত চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী ১০ আগস্ট।

এর আগে, তথ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ এমরুল করিম রাশেদ আজ চট্টগ্রাম সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। একই অভিযোগে নগরীর চকবাজার থানায় আরেকটি মামলা করেন একজন যুবলীগ নেতা।

মামলায় মানহানিকর ভিডিও প্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে কানাডা প্রবাসী ‘সাইবার সন্ত্রাসী’ নাজমুস সাকিবসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- এইচএম কামাল, আজাদ শাহাদাত, সানি প্রধান, সাইফুল ইসলাম তালুকদার, খোন্দকার ইসলাম এবং হাজী হারুন রশিদ। এ ছাড়া যারা ‘নাগরিক টিভি’র ওই ভিডিওতে লাইক, কমেন্টস ও শেয়ার করেছেন, সেই অজ্ঞাত ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা সাইবার সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ষড়যন্ত্রকারী, হলুদ ও ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়দানকারী ব্যক্তি। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী, শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করে কুৎসা রটনা, চরিত্রহনন ও চাঁদা দাবি করে। এটাই আসামিদের একমাত্র পেশা ও নেশা।

তারই ধারাবাহিকতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে হেয় করতে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ‘নাগরিক টিভি’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ থেকে নাম উল্লেখ করে ১৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, উল্লিখিত ছবি সম্বলিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

মামলার বাদী এমরুল করিম রাশেদ জানান, প্রকৃত অর্থে এটা কোনো টিভি চ্যানেল নয়। এটি একটি ইউটিউব চ্যানেল ও  ফেসবুক পেইজ মাত্র। তাদের উল্লিখিত কর্মকা-ের কারণে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত প্রকৃত ‘নাগরিক টিভি’র কর্তৃপক্ষ আসামি কর্তৃক পরিচালিত ভুয়া ও অবৈধ নামধারী ‘নাগরিক টিভি’র সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই মর্মে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যে প্রচার করেছে।

বাদী পক্ষের আইনজীবী এপিপি নিখিল কুমার নাথ বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে কথিত দুর্নীতির ভিডিওটি প্রত্যাহারের জন্য বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এছাড়া, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্তের জন্য আদেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী ধার্য্য তারিখ আগামী ১০ আগস্ট।

বাদী পক্ষে মামলার শুনানিতে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ মিন্টু, আইনজীবী এমএ নাছের চৌধুরী, সুভাষ বড়–য়া, রেহানা বেগম রানু, মোহাম্মদ দিদার, রবিউল আলম, দেলোয়ার হোসেনসহ অনেক আইনজীবী অংশ নেন।

এর আগে, একই অভিযোগে গত রবিবার (১৯ জুন) রাতে তথ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন।

সেই মামলায় কথিত ইউটিউবার নাজমুস সাকিবসহ সাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। বাকি আসামিরা হলেন- এইচএম কামাল, আজাদ শাহাদাত, সানি প্রধান, সাইফুল ইসলাম তালুকদার, খোন্দকার ইসলাম এবং হাজী হারুন রশিদ।

চকবাজার থানার ওসি মনজুর কাদের বলেন, আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে মামলার বিষয়টি দেখছি। নাগরিক টিভি নামক ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলটির এডমিন নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে আগেও এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্তত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সূত্র: বাসস

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //