রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক নয়: পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করলো হাইকোর্ট

রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা প্রজ্ঞাপন নিয়ে করা রিট আবেদনের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, রাষ্ট্রপতি লাভজনক পদ হলেও প্রজাতন্ত্রের সেবাদানে এটি লাভজনক পদ নয়। গত সোমবার রাতে সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ৩৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।

এর আগে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা দুটি রিট গত ১৫ মার্চ সরাসরি খারিজ করে দেন বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবির লিটনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

এদিকে রায় প্রকাশের পর রিটকারী আইনজীবী এমএ আজিজ খান গণমাধ্যমকে বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি সিপি (লিভ টু আপিল) দায়ের করবেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, আমরা মনে করি যে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি লাভজনক পদ হলেও প্রজাতন্ত্রের সেবাদানে এটি লাভজনক পদ নয়। আদালত বলেন, নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশন) সাবেক কমিশনার পদে অধিষ্ঠিত থাকলেও- তা কোনোভাবেই রাষ্ট্রপতির পদে নির্বাচিত হওয়া থেকে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করে না, কারণ রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের লাভজনক পদ নয়। এছাড়াও রাষ্ট্রপতির কার্যাবলী সংক্রান্ত বিধান প্রজাতন্ত্রের সেবায় অন্যান্য কর্মচারীদের প্রবিধানের অনুরূপ নয় বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন আদালত।

রায়ে উচ্চ আদালত বলেন, আমরা মনে করি যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন এবং নিয়োগ একই অর্থ বহন করে না। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হলেন নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশের ঐক্যের প্রতীক। আর সংবিধানের নবম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিরা প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে নিযুক্ত কর্মচারী। এই বিবেচনায় রিট দুটি খারিজ করা হয়েছে বলেও রায়ে উল্লে­খ করেছেন আদালত।

গতকাল সোমবার (২৪ এপ্রিল) দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। এর আগে একক প্রার্থী হওয়ায় চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। এ প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে ৭ মার্চ একটি রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এমএ আজিজ খান। 

এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা নিয়ে আবদুল মোমেন চৌধুরী, কেএম জাবিরসহ ছয়জন গত ১২ মার্চ আরেকটি রিট করেন।

পরে দুটি রিটের ওপর শুনানি শেষে ১৫ মার্চ সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিলে আবেদন করলে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন এবং পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে আপিল দায়ের করতে বলেন। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পরে আইনজীবী এমএ আজিজ খান গণমাধ্যমকে বলেন, এখন যেহেতু পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে, আমরা সিপি (লিভ টু আপিল) দায়ের করব। আশা করি, আপিল বিভাগে আমাদের আবেদনের শুনানি হবে, সেখানে এ রিটের ফয়সালা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //