তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা মামলার রায় কাল

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ২০১৫ সালে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে বোমা হামলার ঘটনায় করা মামলার রায় হবে আগামীকাল মঙ্গলবার (১৫ মার্চ)।

ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রায় ঘোষণা করবেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম ছারোয়ার খান জাকির।

আলোচিত এ মামলার আসামিরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সক্রিয় সদস্য। গ্রেপ্তার করা আসামিদের ৮ জনকে রায়ের সময় আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হবে। তাদের উপস্থিতিতে রায় পড়ে শোনাবেন বিচারক।

এর আগে ১ মার্চ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে ট্রাইব্যুনালের বিচারক ১৫ মার্চ রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে দেয়া সাক্ষ্যে অপরাধ প্রমাণ হয়েছে। আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ ও আজিম উদ্দিন শিমুল বলেন, ‘মামলাটিতে সম্পূর্ণ সন্দেহের ভিত্তিতে আসামি করা হয়েছে। মামলার ঘটনায় আসামিদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এমনকি আদালতে সাক্ষীরা প্রমাণ করতে পারেননি যে তারা আসামিদের বোমা নিক্ষেপ করতে দেখেছেন। রাষ্ট্রপক্ষ অপরাধ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে, সে জন্য আসামিরা খালাস পাবেন।’

২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর রাতে হোসেনি দালান এলাকায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা বোমা হামলা চালায়। এতে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।

এ ঘটনায় রাজধানীর চকবাজার থানায় এসআই জালাল উদ্দিন মামলা করেন। প্রথমে মামলাটি চকবাজার থানা পুলিশ তদন্ত করে। পরে এর তদন্তভার ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।

মামলাটি তদন্ত শেষে ডিবি দক্ষিণের পরিদর্শক শফিউদ্দিন শেখ ২০১৬ সালের এপ্রিলে ১০ জঙ্গিকে আসামি করে চার্জশিট অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর ওই বছরের অক্টোবরে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়।

২০১৭ সালের ৩১ মে ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এরপর মামলাটি ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়। ওই আদালতে জালাল উদ্দিন সাক্ষ্য দেন।

এরপর ২০১৮ সালের ১৪ মে মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলি হয়। এরপর চার্জশিটভুক্ত ১০ আসামির মধ্যে জাহিদ হাসানের পক্ষে তার আইনজীবী আদালতে দাবি করেন ওই আসামি নাবালক। এর সপক্ষে জন্মসনদ, পরীক্ষার সনদ জমা দেয়া হয় ট্রাইব্যুনালে। আদালত সব কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওই আসামিকে শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করে।

আইন অনুযায়ী, ওই আসামিকে শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করে সম্পূরক চার্জশিট দিতে বলে। তদন্ত কর্মকর্তা সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর মাসুদ রানা নামে আরেক আসামিকে শিশু দাবি করেন তার আইনজীবী। পরে মাসুদ রানাকেও শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করে আরেকটি সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এই দুজনের মামলা বর্তমানে শিশু আদালতে বিচারাধীন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //