পিলখানা হত্যা মামলা

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামির খালাস চেয়ে আপিল

রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ হত্যা মামলায় হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নয় আসামি খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় নয়জন আসামির পক্ষে আপিল দায়ের করা হয়।

ওই মামলায় উচ্চ আদালতে খালাস পাওয়া ও সাজা কমা ৮৩ জনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের প্রায় দুই সপ্তাহের ব্যবধানে আসামিপক্ষ আপিল করেলো।

এছাড়া হাইকোর্টের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে ৪৮টি আপিলের কথা জানিয়ে পেপারবুকসহ অন্যান্য কাগজপত্র সরবরাহ থেকে অব্যাহতি চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করা হয়েছে। আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জানান, শুধু নয় আসামির আপিলে নথিপত্রে পৃষ্ঠার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৫। অন্য আসামির আপিলের ক্ষেত্রে এসব নথি থেকে রেহাই দিতে প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পাওয়া গেলে অন্য আসামিদের আপিল ১৩ জানুয়ারির মধ্যে করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কামাল মোল্লা, মনিরুজ্জামান, ইউসুফ আলী, আবু সাঈদ আলম সাঈদুর রহমান, আনিসুজ্জামান, ফজলুল করিম, বজলুর রশীদসহ নয়জনের আপিল আবেদন গতকাল ৫ জানুয়ারি আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করা হয়েছে। এসব আপিলে বিচারিক আদালতের রায়, হাইকোর্টের রায়, আনুষঙ্গিক কাগজপত্রসহ মোট পৃষ্ঠাসংখ্যা ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৫ এ দাঁড়িয়েছে।

তিনি জানান, অন্য আসামিদের ক্ষেত্রে যেন এসব নথি না দিতে হয়, সে ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। তিনি অনুমতি দিলে ১৩ জানুয়ারির মধ্যে তাদের বিষয়ে আপিল করতে পারবো।

হাইকোর্টে খালাসপ্রাপ্ত ও যাদের সাজা কমানো হয়েছে সে সব আসামিদের বিরুদ্ধেও ইতিমধ্যে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ১৫২ জন বিডিআর সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ২৭৮ জনকে খালাস দিয়ে রায় দেন বিচারিক আদালত। ওই রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন। গত বছরের ৮ জানুয়ারি ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার হাইকোর্টের রায় প্রকাশ হয়।

বিচারিক আদালতে দেয়া মৃত্যুদণ্ড পাওয়াদের মধ্যে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া একজন মারা গেছেন। বাকি ১২ জনের মধ্যে আটজনের সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও অন্য চারজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে ১৮৫ জনকে। তার মধ্যে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন।

আদালত ১৩ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন দু’জনকে, ১৫৭ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন। এর মধ্যে দু’জন মারা গেছেন। ১৩ জনকে সাত বছর করে, ১৪ জনকে তিন বছর করে, এক বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে দু’জনকে। মোট ৫৫২ জনকে সাজা ও ২৮৩ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। মোট মারা গেছেন ১৪ জন।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। ওই বিদ্রোহের সময় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই দেশের ইতিহাসে বৃহত্তর মামলা। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //