শর্ত ভঙ্গ করায় জোবায়েরের জামিন বাতিল

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি জোবায়ের মনির শর্ত ভঙ্গ করায় তার জামিন বাতিল করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। 

একইসাথে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তিনি সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা। 

আজ রবিবার (৯ আগস্ট) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন। 

ট্রাইব্যুনালে জামিন বাতিলের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম। এর আগে ৫ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামিন বাতিলের আবেদন করা হয় বলে জানান তিনি। 

তিনি আরো বলেন, আসামি জোবায়ের মনিরকে ঢাকার বাসায় থাকার শর্তে জামিন দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু সে শর্ত তিনি ভঙ্গ করে নিজ এলাকায় গিয়ে দলবল নিয়ে মহড়া দিচ্ছেন। সাক্ষীদের ভয় ভীতি দেখাচ্ছেন। এ কারণে তার জামিন বাতিল চাওয়া হয়েছিল।

জানা গেছে, জোবায়ের ঈদের আগের দিন গ্রামের বাড়ি শাল্লা উপজেলার দৌলতপুরে গিয়ে পশু কোরবানিতে অংশ নেন। পরে নিজস্ব লোকজন নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সোমবার (৩ আগস্ট) ঢাকায় ফিরেন। এ ঘটনায় মামলার বাদী, সাক্ষী ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষজন আতঙ্কে আছেন। এলাকায় একক প্রভাবশালী হিসেবে এখনো প্রতিষ্ঠিত জোবায়ের মনিরের পরিবার। 

পরে গণমাধ্যমে বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর তার জামিন বাতিল চেয়ে আবেদনের করে প্রসিকিউশন।

২০১৬ সালের মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি লিখিত অভিযোগ দেন পেরুয়া গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা রজনী দাস। এরপর ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা এই গণহত্যার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করে। একপর্যায়ে এই গণহত্যায় যুক্ত থাকা ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি করেন ট্রাইব্যুনাল। 

২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর জোবায়ের মনির, জাকির হোসেন, তোতা মিয়া, সিদ্দিকুর রহমান, আবদুল জলিল, আবদুর রশিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৯ সালের ১৭ জুন রজনী দাসের করা মামলায় জোবায়ের মনিরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নুর হোসেন।

১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর হাওরাঞ্চলের শীর্ষ দালাল আব্দুল খালেকের নির্দেশে পেরুয়া, উজানগাঁও, শ্যামারচরে ভয়াবহ গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হয়। শ্যামারচর বাজারের স্কুলের সামনে ২৭ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে লাইন ধরিয়ে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়। পরে কয়েকটি পল্লীতে প্রায় তিন শতাধিক প্রশিক্ষিত রাজাকার বাহিনী দিয়ে নারীদের ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে। ওই গণহত্যায় নেতৃত্ব দেয় দালাল আব্দুল খালেকের ভাই মুকিত মনির, কদর আলী, ছেলে প্রদীপ মনির, জোবায়ের মনিরসহ প্রশিক্ষিত রাজাকার বাহিনী। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //