ঈদ মানেই স্বজন-বন্ধুদের সঙ্গে মিলে সুন্দর আনন্দঘন দিন। এদিন আপন ঘরটিও যদি উৎসবের আমেজে রাঙিয়ে নেওয়া যায় তাহলে আগত সবার মনে ইতিবাচক স্রোত বয়ে যায়। দুর্মূল্যের এই বাজারে টাকার সাশ্রয় করেও নিত্যকার একঘেয়েমি দূর করতে ঘরকে সাজিয়ে তুলতে পারেন নিজের মননশীলতায়। লিখেছেন রুবানা শারমীন লুপা
ঈদে ঘর সাজানোর কৌশল
- ঘরে নতুনত্ব আনতে সব যে নতুন কিনতে হবে তা নয়। সবার আগে ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভাঙা, ময়লা, তেল চিটচিটে ও বহুদিনের অব্যবহৃত জিনিস সব সরিয়ে ফেলুন। জিনিস কম থাকলে ঘর পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর দেখায়।
- ঘরের প্রতিটি কোণে ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন আনুন। শোয়ার ঘরে আভিজাত্য আনে সাদা ধবধবে বিছানার চাদর। যা হতে পারে সিল্ক বা গরদের। সুতির ওপরে পছন্দমতো রঙ-নকশা কেটে ব্লক বা হাতের কাজও করিয়ে নিতে পারেন। ট্র্যাডিশনাল সাজের ষোলোকলা পূর্ণ করতে নেটের লেস, কুঁচি দেওয়া বেডশিট-বালিশের কাভারও করতে পারেন।
- জানালা-দরজায় নতুন পর্দা যোগ করতে পারেন অথবা পুরো বাড়ির মধ্যে নজরকাড়ে যে অংশটুকু সেখানকার দেয়ালে স্টিকার লাগাতে পারেন। এক রুমের পর্দা আরেক রুমে দিয়েও নতুনত্ব আনা যায়।
- বসার ঘরের মেঝেতে থ্রি-ডি ম্যাট বিছাতে পারেন। বসার ও শোয়ার ঘরে শতরঞ্জি, কার্পেট বিছিয়ে আভিজাত্য আনা যায়।
- শিশুদের খেলনা, টেডি বিয়ার, বই-খাতা গুছিয়ে রাখুন।
- সঙ্গে রাখুন নানা রঙের মরিচ বাতির আলোকসজ্জা। হ্যান্ডপেইন্ট করা লাইট, বাঁশের তৈরি টেবিল ল্যাম্পও রাখা যায়।
- ড্রইংরুমে ডিভান-সোফার কাভার ও কুশন কাভার বদলে ফেলতে পারেন। সাশ্রয়ের কথা এলে বসার ঘরের আসবাবপত্রগুলো নতুন করে সাজাতে পারেন।
- নতুন ও একক সংসার হলে গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে সোফার বদলে বিন ব্যাগ বা বড় বালিশের মতো গদি ব্যবহার করতে পারেন। এতে জায়গাও বাড়বে, আসবে নতুনত্বের ছোঁয়াও। ভারী আসবাবের বদলে মেঝেতেই কার্পেট, জাজিমের ওপর কুশন রেখে বানিয়ে ফেলতে পারেন বসার জায়গা।
- ডাইনিং টেবিল, ডিভানের জায়গা অদল-বদল করতে পারেন।
- ঘরের কোণে ছোট টুলে, সেন্টার টেবিলে, শু-র্যাকের ওপর শো-পিস, ফুলদানি, বোলের পানিতে ফুলের পাপড়ি ভাসিয়ে দিতে পারেন। ছোট গ্লাসের জারে দু-একটা মাছও রাখা যায়।
- দেয়ালে পেইন্টিং, নিজেদের বাঁধাই করা ছবি, ওয়াল হ্যাঙ্গিং দিয়ে ঘরে নান্দনিকতার ছোঁয়া দেওয়া যায়।
- বাড়ির সদর দরজার সামনে উজ্জ্বল রঙের ফুলের ঝালরও লাগানো যায়। উইন্ড চাইম, ডোর বেলও অসাধারণ হবে।
- খাবার টেবিলে উজ্জ্বল গাঢ় রঙের ম্যাট-রানার সুন্দর লাগবে। জ্যামিতিক, ফুলেল, স্ট্রাইপ প্যাটার্নের ম্যাট-রানারে আসবে বৈচিত্র্য।
- বাগানের শখ থাকলে বারান্দায় বেশ কিছু গাছ রেখে মেঝেতে আর্টিফিশিয়াল ঘাস কার্পেট বিছাতে পারেন। বসার ঘরে, বেসিনের ওপর, রান্নাঘরে এমনকি ওয়াশরুমেও রাখতে পারেন মানানসই গাছ।
- ঘরের বারান্দা বড় হলে দোলনা ঝুলিয়ে দিতে পারেন। গ্রিলে চিক ঝুলাতে পারেন।
- চাঁদরাতেই রান্নাঘর পরিষ্কার করে গুছিয়ে রাখুন। সকালে উঠে যাতে কোনো জিনিস খুঁজে পেতে অসুবিধা না হয়। রান্নার হাঁড়ি, ছুরি-কাঁচি-বঁটি, মসলা, প্লেট, সার্ভিং বোল, চামচ, চায়ের কাপ-পিরিচ সব গুছিয়ে রাখুন।
- পরিবেশনের পাত্রগুলো ক্যাবিনেটে রাখলে কোন বাসন ব্যবহার করবেন, কোন সার্ভিং বোলে কী খাবার রাখবেন, সেটা বুঝে সামনের দিকে রাখুন।
- রান্নাঘরের তেল চিটচিটে ভাব ও রান্নার গন্ধ দূর করতে কিছু ভাজার পর গ্যাসের চুলার একটু দূরে এক কাপ হোয়াইট ভিনেগার রাখুন।
- রান্নাঘরের মেঝের টাইলসে লিকুইড ক্লিনার ছড়িয়ে দশ মিনিট পর ভেজা কাপড় দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করুন।
- ময়লা ফেলা বিনে পলিথিন দিয়ে রাখুন, ভরে গেলে যাতে সহজে তুলে ফেলা যায়।