বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গর্ভধারণে জটিলতা বিষয়ক পিসিওএস সচেতনতা মাস পালিত

নারী ও পুরুষের বন্ধ্যাত্ব রোগের উন্নত চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে: উপাচার্য

“ক্ষমতাপ্রাপ্ত রোগী, ভালো ফলাফল” স্লোগানকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গর্ভধারণে জটিলতা বিষয়ক পলিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম পিসিওএস সচেতনতা মাস সেপ্টেম্বর পালিত হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার সকালে (২৬ সেপ্টেম্বর) দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইনোলজি এন্ড ইনফাটিলিটি বিভাগ একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে।

প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ এ শোভাযাত্রার শুভ উদ্বোধন করেন। যেসকল নারী সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে জটিলতা, দীর্ঘ সূত্রিতায় ভুগছেন তাদের মধ্যে একটি রোগ হল পলিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (পিসিওএস)।

শোভাযাত্রার পূর্বে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) প্রজননক্ষম মহিলাদের একটি অন্যতম প্রধান হরমোন ও বিপাকজনিত সমস্যা। প্রতি ১০ জন নারীর একজন এ সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। মাসিক শুরু হওয়ার পর কিশোর বয়স থেকেই এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে। হরমোনজনিত এ রোগে আক্রান্ত নারীদের ওজন বৃদ্ধি পাওয়াসহ বিভিন্ন অংশে অপ্রয়োজনীয় চুল গজানো, প্রতিনিয়ত চুল পড়া বা চুলের ঘনত্ব হালকা হতে থাকা, ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে হওয়া বা ব্রণ হওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশের ত্বক কালো হয়ে যেতে থাকে-যেমন হাত কিংবা স্তনের নিচের ত্বকে, গলার পেছনের অংশে, কুঁচকিতে কালো দাগ ইত্যাদি, ঘুমে সমস্যা হওয়া, সারাক্ষণ দুর্বলতা অনুভব করা, মাথাব্যথা, অনিয়মিত পিরিয়ড (মাসিক) হওয়া, পিরিয়ডকালীন সময়ে অতিরিক্ত রক্ত যাওয়ার ফলে গর্ভধারণে সমস্যার সৃষ্টি হওয়া ইত্যাদি। এই রোগে নারীদের গর্ভধারণে জটিলতা, ডায়াবেটিস, মেটাবোলিক সিনড্রোম যেমন হৃদনালি সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়া, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড, কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ বাড়া, বিষণ্ণতা অনুভব করা, জরায়ু থেকে রক্তপাত হওয়া, তল পেটে তীব্র ব্যথা হওয়া ও যকৃতে প্রদাহ হতে পারে।

শোভাযাত্রায় জানানো হয়, পিসিওএস আক্রান্তদের শীরর চর্চা ও  ওজন কমানো জরুরি। ওজন পাঁচ শতাংশ কমাতে পারলে পিরিয়ড নিয়মিত হতে শুরু হতে পারে। আর ওজন ১০ শতাংশ কমাতে পারলে ডিম্বাশয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে এবং বন্ধ্যত্বের সমস্যা দূর হবে। সুষম খাবারসহ প্রচুর পানি বা মিষ্টিহীন জলীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ই দৈনন্দিনের খাবার গ্রহণ করা জরুরি। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ রক্তচাপ কমানো, চর্বিতে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে পিসিওএস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের রোগীরা যেসকল ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায় তার মধ্যে নারীদের বন্ধ্যাত্ব অন্যতম। এর ফলে দেশের মুদ্রা বিদেশে চলে যায়। ইতিমধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইনোলজি এন্ড ইনফাটিলিটি বিভাগে পুরুষ ও নারীদের বন্ধ্যাত্ব রোগের উন্নত চিকিৎসা সেবা শুরু হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে বন্ধ্যাত্ব রোগের বিশ্বমানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। যার ফলে দেশের বন্ধ্যাত্ব নারী পুরুষ মাতৃত্ব ও পিতৃত্বের  অনুভূতি লাভ করতে পারবেন বলে আশা রাখি।

শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রাইনোলজি এন্ড ইনফাটিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানু,  বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. শাকিলা ইসরাত, ডা. ফারজানা দীবা, ডা. নূরজাহান বেগম, ডা. শাহীন আরা আনওয়ারী প্রমুখসহ  বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্ট, কর্মকর্তা নার্স ও কর্মচারীরা অংশ নেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //