পঞ্চাশেও থাকুন সতেজ

এইতো আজকে ৫০-এ পা দিলেন। এটা ভেবে মন খারাপ হয়ে গেল, তাই না? জীবনের শেষভাগের সিঁড়িতে পা রাখলেন। প্রায়ই শরীরে রোগব্যাধি লেগে আছে। ছেলে-মেয়েরা যার যার পরিমণ্ডলে ব্যস্ত। আপনাকে সময় দেওয়ার কোনো তাড়নাবোধ তাদের নেই। মাঝে মাঝে নিজেকে একা মনে করছেন। জীবনের এই সন্ধিক্ষণে আপনার নিজের দায়িত্ব, যত্ন নিজেকেই নিতে হবে।

দৈনন্দিন জীবনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। এতদিন যা করা হয়েছে, এখন থেকে সেসব করতে হবে বুঝেশুনে। বয়স ৫০ পেরিয়ে গেলে কী কী নিয়ম মেনে চলতে হবে, চলুন দেখে নেই- 

খাওয়া-দাওয়ার দিকে নজর: খাওয়া-দাওয়ার প্রতি নজর দিতে হবে। বেশি খেতে হবে তাজা ফল ও শাক-সবজি। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে যাতে প্রোটিনের ঘাটতি না হয়। তাই প্রাণিজ প্রোটিন অর্থাৎ আমিষ যেমন- ডিম, দুধ, মাছ, মাংস খেতে হবে।

খাওয়ার সময়: সঠিক সময়ে খাবার খেতে হবে। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা একেবারেই চলবে না। অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে তেলজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার ও বাইরের খাবার অর্থাৎ স্ট্রিট ফুড কিংবা জাঙ্ক ফুড না খাওয়াই ভালো। স্বাদ বদলের জন্য মাঝেমধ্যে খাওয়া যেতে পারে, তবে নিয়মিত অভ্যাস রাখা যাবে না।

চিনি বাদ: চায়ে চিনি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে ধীরে ধীরে তা ত্যাগ করতে হবে। চিনির পরিবর্তে মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেকে গুড় দিয়েও চা খেয়ে থাকেন। বারবার দুধ-চা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা ধীরে ধীরে কমিয়ে ফেলতে হবে। মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খেতে হবে।

শরীরচর্চা: নিয়মিত শরীরচর্চার করতে হবে। ভারী এক্সারসাইজ বা জিমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। রোজ একটু হাঁটা, ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার জন্য যথেষ্ট। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।

অন্যান্য: শরীরে কোনো প্রয়োজনীয় উপকরণ অর্থাৎ ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন- এসবের ঘাটতি একেবারেই হতে দেয়া যাবে না। কোনো সমস্যা বুঝতে পারলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া একেবারে নিষেধ। পাশাপাশি প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। এই ব্যাপারে অনিয়ম না করাই ভালো। দিনে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি।

হার্টের সুস্থতা সম্পর্কে সচেতন থাকুন: হার্টের ওপর বয়স্কতার প্রভাব বলিরেখা ও সাদা চুলের মতো স্পষ্ট নয়; কিন্তু ৫০ বছর বয়সে পৌঁছলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হার্টের যত্ন নেওয়া উচিত। বয়স বাড়লে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে, তাদের এক নম্বর ঝুঁকি হচ্ছে হৃদরোগ; মেনোপজের সময় হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ভালো সংবাদ হচ্ছে- লাইফস্টাইলে পরিবর্তন এনে আপনি নাটকীয়ভাবে ঝুঁকি কমাতে পারেন। যদি আপনার ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকে, তা হলে তা শুরু করা প্রয়োজন। 

শার্প থাকুন: নতুন কোনো ভাষা শেখা বা দক্ষতা অর্জন থেকে শুরু করে মানসিক উদ্দীপনা যোগায় এমন কোনো কাজে অংশগ্রহণ মস্তিষ্কের কোষের নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করে। আমাদের শৈশবে বা তারুণ্যে অর্জিত দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা বার্ধক্যেও ভালো থাকবে যদি আমরা আমাদের মেধাকে ধার দিই, যেমন- মেধাকে শাণিত করার উপায় হচ্ছে বই পড়া অথবা মিউজিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট প্লে করা। বার্ধক্যে স্মৃতি স্মরণের সামর্থ্য হ্রাস পেতে পারে, এক্ষেত্রে বয়স্কদের ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি সাহায্য করতে পারে। 

ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি মেমোরি ফাংশন উন্নত করে। আপনার পঞ্চাশে ব্যায়াম শুরু করার জন্য এটি একটি ভালো কারণ, এমনকি আপনি পূর্বে ব্যায়াম না করলেও। তিনি যোগ করেন- ব্যায়াম অ্যালঝেইমারস বা ডিমেনশিয়া নিরাময় না করলেও আপনার মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //