যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে ত্রুটি ও ভুল রয়েছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ২০২২ সালের কান্ট্রি রিপোর্টে কিছু মৌলিক ত্রুটি ও ভুল রয়েছে। ঢাকা সেগুলো ওয়াশিংটনের কাছে তুলে ধরবে।

আজ মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজের দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। 

মো: শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা বিশ্লেষণ করে দেখব, এগুলোয় আদৌ আমলে নেওয়ার কোনো বিষয় আছে কি না।

তিনি আরও বলেন, আপত্তির দিকগুলো ও দুর্বলতা সামনের দিনগুলোয় দুই দেশের মধ্যে কোনো উচ্চপর্যায়ের সফর বা বৈঠকে তুলে ধরা হবে, যাতে পরবর্তী প্রতিবেদনে তা না থাকে।

এর আগে, গত সোমবার (২০ মার্চ) ‘২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বাংলাদেশ অংশে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, ধরপাকড়; মানবাধিকারকর্মী, নাগরিক সমাজ ও সরকার সমালোচকদের প্রতি হুমকি-হয়রানি-নির্যাতন; মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ; শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশে বাধাসহ নানা বিষয় উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাছে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে বিবেচিত হয়নি। ওই নির্বাচনে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরানো, বিরোধী দলের প্রার্থীদের এজেন্ট–ভোটারদের ভয় দেখানোসহ নানা অনিয়মের খবরে পর্যবেক্ষকেরা এ ধারণা পোষণ করেন।

এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি বন্ধুরাষ্ট্র নিয়ে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। আমরা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বলে থাকি, এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার আগে আমরা যাতে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারি। বিভিন্ন সময়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এবং বরাবরের মতো এবারও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি। আমি মনে করি, এটি একটি বড় ধরনের দুর্বলতা।

মার্কিন প্রতিবেদনে আরেকটি দুর্বলতা রয়েছে বলে প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন। সেটি হলো মার্কিন প্রতিবেদনে উন্মুক্ত সূত্র থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে স্ববিরোধী অবস্থান প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, অনেক সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে, বাক্‌স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। কিন্তু তাদের প্রতিবেদনে উন্মুক্ত সূত্রের অনেক উদাহরণ আছে। এতে প্রমাণিত হয় যে খবর তৈরিতে সরকার বাধা প্রদান করে না।

প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন, মার্কিন প্রতিবেদনে কিছু দেশি-বিদেশি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনের বরাত (রেফারেন্স) দেওয়া হয়েছে, যার অন্যতম হচ্ছে অধিকার।

তিনি বলেন, আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, বর্তমানে অধিকারের কাজ করার কোনো বৈধ কাগজ বা লাইসেন্স নেই।

তিনি আরও বলেন, কোনো নাগরিক সমাজের সংগঠন বা বেসরকারি সাহায্য সংস্থা, যার একটি রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে, রাজনৈতিক পরিচয় আছে, তাদের নিরপেক্ষতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের দুর্বলতা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে প্রতিবেদনের (মার্কিন) গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে যায়।

২০২১ ও ২০২২ সালের মার্কিন প্রতিবেদনের মধ্যে গুণগত কোনো তফাত নেই বলে উল্লেখ করেন শাহরিয়ার আলম।

তিনি বলেন, কোথাও কোথাও আমাদের প্রশংসা করা হয়েছে এবং সে জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে বিভিন্ন জায়গায় আমরা উন্নতি করেছি, তার প্রতিফলন এই প্রতিবেদনে রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //