জলবায়ুর ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কন্ঠস্বর হয়ে উঠবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যার সঠিক কারণ অনুধাবন করার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর বৈশ্বিক কণ্ঠস্বর হিসাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

মঙ্গলবার (৯ জুন) ঢাকা মার্শাল আইল্যান্ড থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২০-২২ সালের জন্য জলবায়ুু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরামের (সিভিএফ) এবং ভালনারেবল টোয়েন্টি (ভি২০) এর প্রেসিডেন্টের পদ গ্রহণ করে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশ, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ এবং ইথিওপিয়া তিন দেশের মন্ত্রী এবং সিভিএফ বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা দলের মাঝে ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কণ্ঠস্বর হবে এবং সিভিএফ ও ভি২০ এর প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় তুরে ধরবে।

বিশ্ব উষ্ণায়নের কুপ্রভাবের কারণে যে দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেই ৪৮টি দেশের বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব হলো এই সিভিএফ।

জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন নামে পরিচিত দলগুলোর (কোপ-২৫) ২৫তম বার্ষিক সম্মেলনে গত বছরের ডিসেম্বরে প্যারিসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রেসিডেন্ট হিলদা হেইন কর্তক এ বছর থেকে সিভিএফের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করেন।

ড. মোমেন বলেন, নতুন সিভিএফ ও ভি২০ ট্রাস্ট ফান্ড তৈরি, জলবায়ু পরিবর্তনে নতুন বিশেষ দূতের থাকার সম্ভাবনা, সিভিএফের বিষয়ভিত্তিক দূত নিয়োগ এবং জলবায়ুু পরিবর্তনের জন্য বিশেষ দূত নিযুক্ত করা, ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি মনিটরের তৃতীয় সংস্করণের প্রকাশনা বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট থাকাকালে উচ্চ মর্যাদায় পৌঁছবে।

তিনি বলেন, আমরা লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জলবায়ু উদ্বাস্তুুদের বাস্তুচ্যুত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরবো।

তিনি সব সিভিএফ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সিভিএফ এবং ভি২০-কে সর্বোচ্চ পর্যায়ের অগ্রাধিকার দিতে এবং অগ্রাধিকার কাজ এগিয়ে নিতে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে অবদান রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

মোমেন বলেন, আমি উন্নয়ন সহযোগীদের সিভিএফকে উদারভাবে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ করছি, কারণ, আজ জলবায়ুতে বিনিয়োগ করায় আমাদের শিশুদের জন্য আগামী দিনের সুরক্ষার ব্যবস্থা হবে।

কভিড-১৯ মহামারির কারণে এই ছিন্নবিচ্ছিন্ন বৈশ্বিক অর্থনীতির সময় বাংলাদেশ কীভাবে বিশ্ব প্ল্যাটফর্মে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলো তুলে ধরবে এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট মহামারি থেকে আরও খারাপ হতে পারে বলে কোন সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি এড়াতে পারবে না।

তবে, তিনি বলেন, আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের (বাংলাদেশকে) নেতৃত্বের ভূমিকা নিতে হবে। আমি সিভিএফ সদস্য ও বিশ্বের মানুষের সমর্থন ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে বিশ্বাসী, আমরা কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করতে পারি এবং আশা করি, আমাদের লক্ষ্যে (জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিষয়সমূহ) পৌঁছতে হবে।

২০০৯ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের আগে যে দেশগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত দেশগুলোর সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে মালদ্বীপ সিভিএফ গঠন করে।

২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সিভিএফের তিনবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকালে ২০১১ সালে মন্ত্রী পর্যায়ের ফোরাম মিটিং-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব বান কি মুনের উপস্থিতিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে।

মার্শাল দ্বীপের পররাষ্ট্র বিষয়ক ও বাণিজ্যমন্ত্রী ক্যাসটেন এন নেমরা এবং ইথিওপিয়ার পরিবেশ, বন ও জলবায়ুু পরিবর্তন কমিশনার অধ্যাপক ড. ফিকাডু বিয়েনিও বৈঠকের পর ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে যোগ দেন এবং এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন। বাসস

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //