এনআরসি-সিএএ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়: শ্রিংলা

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) কোনো প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বে না।

দুইদেশের মধ্যে ‘সবচেয়ে বিস্তৃত ও সংহত’ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এরআরসি ও সিএএ পুরোপুরিই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। 

আজ সোমবার (২ মার্চ) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘বাংলাদেশ ও ভারত: একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইএসএস) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। মুজিববর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর চূড়ান্ত করতে ঢাকায় এসেছেন শ্রিংলা। আজ সকাল ৯টার দিকে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

সেমিনারে শ্রিংলা বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে ও অনেকগুলো অভিন্ন সাংস্কৃতিক ধারা থাকায় এটাও অস্বীকার করা যায় না যে, আমাদের দুই দেশেরই কিছু ঘটনা কারণে বা অকারণে সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। যার সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো আসামে নাগরিকপঞ্জি হালনাগাদকরণ, যে প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণভাবে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে আমি স্পষ্ট করেই বলতে চাই, আমাদের প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) বারবার বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আশ্বস্ত করেছেন যে, এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সুতরাং বাংলাদেশের জনগণের উপর এর কোনো প্রভাব থাকবে না। আমরা এই ব্যাপারে আপনাদের আশ্বস্ত করছি।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মানবিক সংকট ও বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব বিষয়ে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে অনেকের আগ্রহ ও ভিত্তিহীন ধারণাও আছে। আমি স্পষ্টভাবেই বলতে চাই, ভারত বাংলাদেশের মানবিক বোধের গভীর প্রশংসা করে, যে বোধ থেকে তারা প্রায় ১০ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। আপনারা যে বোঝা বহন করছেন, আমরা তা স্বীকার করি ও সমবেদনা জানাই। 

তিনি বলেন, আমরাই বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়েরই একমাত্র সত্যিকার বন্ধু দেশ। যেখানে অন্য দেশগুলো চায় আপনারা এই সমস্যা অনির্দিষ্টকালের জন্য বয়ে চলুন, সেখানে আমরা পারস্পরিক গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে একটা সমাধান চাই এবং এই বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোর রাখাইনে দ্রুততম প্রত্যাবাসন ও সম্মানজনক জীবন ফিরে পেতে সহায়তা করতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই প্রত্যাবাসন হতে হবে নিরাপদ ও টেকসই।

দুইদেশের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।

এসময় তিনি পানি বণ্টন ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ রক্ষার বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন, ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ রক্ষায় বাংলাদেশ ও ভারতকে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। দুদেশের মধ্যকার দীর্ঘমেয়াদী সব সমস্যার সমাধানের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিআইএসএসের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম ও ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস।

বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও, পররাষ্ট্রসচিব হিসাবে এটিই শ্রিংলার প্রথম বাংলাদেশ সফর।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //