জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের কোনো ভূমিকা নেই। কিন্তু এর প্রভাবে আমরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এ ক্ষতিরোধে কাজ করছে সরকার। 

রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন, কোনো দেশ বলতে পারবে না যে, কারও সঙ্গে আমাদের বৈরীতা আছে। আমরা আমাদের পররাষ্ট্র নীতি- ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরীতা নয়’ অনুসরণ করে যাচ্ছি। এমনকি মিয়ানমার যে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করে আমাদের দেশে পাঠিয়েছে তাদের সঙ্গেও আমাদের ঝগড়া নেই।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আজ সোমবার আয়োজিত এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের শান্তি নিরাপত্তায় কৌশলগত নীতি প্রণয়ন নিয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনার ‘ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগ ২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সতর্ক সরকার। একদিন আগেই আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেছি। প্রাকৃতি দুর্যোগ আসবেই এবং এটাকে মোকাবিলাও করতে হবে। আমরা সেটা করবোও। দুর্যোগকালীন কী কী পদক্ষেপ নিতে হয় তা আমরা জানি।

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য আমার নিজস্ব অর্থায়নের ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি। সেই অর্থ দিয়েই দুর্যোগ মোকাবিলায় যা যা করণীয় তা করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক লাখ রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ রোহিঙ্গা আমাদের জন্য নয় পুরো বিশ্বের জন্য হুমকি স্বরূপ।’

বিষয়টি অনুধাবন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান তিনি।

সাগর ও মহাসাগরের গুরুত্ব প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, নানা কারণে সাগর ও মহাসাগর গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মহাসাগরের সঙ্গে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রুট রয়েছে। যা দিয়ে পণ্য, তেল ও গ্যাস পরিবহন করা হয়। এ অঞ্চলের ৮০ শতাংশ তেল বাণিজ্য হয় এ রুট দিয়ে। সাগর ও মাহাসাগর বিপুল পরিমাণ মৎস্য ও খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার। এই সম্পদ দেশের উন্নয়নের কাজে লাগতে হবে। ভূমি থেকে আমরা যে সম্পদ পাই সমপরিমাণ সম্পদ সমুদ্রসীমার মধ্য থেকে আহরণ করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন মাত্রাত্রিরিক্ত সম্পদ আহরণ করা না হয়। সেটা আবার সাগর ও মহাসাগরের জন্য হুমকিস্বরূপ।

বাংলাদেশের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ দেশজ উৎপাদনে ৩০তম হয়েছে। এ স্বীকৃতি আমরা ধরে রাখতে চাই। আমাদের সরকার ২০২১ ও ২০৪১ এ দুটি রূপকল্প হাতে নিয়েছে। আমরা এমডিজি বাস্তবায়ন করে এসডিজি বাস্তবায়নে কাজ করছি। 

তিনি বলেন, ২০০৬ সালে বাংলাদেশে দারিদ্রতা ছিল ৪১ শতাংশ, এখন সেটা এসে দাঁড়িয়েছে ২১ শতাংশে। আমরা এ অবস্থার আরো উন্নতি করার জন্য কাজ করছি। আমরা অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী প্রণয়নে কাজ করছি। আমাদের সরকার শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়েছে। ২ কোটি ৩ লাখ শিক্ষার্থীকে বিনামূলে বই দেয়া হয়েছে। আমরা স্বাস্থ্যেও গুরুত্ব দিয়েছি। ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র করেছি। এখান থেকে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এতে মা ও শিশুরা উপকার পাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানে সব থেকে বড় শক্র হচ্ছে দারিদ্র্য। আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করতে পারলে এটা মোকাবিলা করা যাবে। সমুদ্র তীরবর্তী দেশ হিসেবে এদেশের অর্থনীতিতে সমুদ্রের ভূমিকা ব্যাপক। আমার দেশের অথনৈতিক উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছি।

সেমিনারে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি ও বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মধ্যে কীভাবে যোগসূত্র স্থাপন করে বাংলাদেশসহ অন্য সমমনা দেশগুলো তাদের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পথযাত্রা নির্ধারণ করতে পারে, সেটি নিয়ে আলোচনা হবে। প্রায় ৫০টি দেশের মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, আমলা, একাডেমিশিয়ান, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরাসহ প্রায় ২০০ জন অংশগ্রহণ করবেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //