নেপাল জয় করতে চায় বাংলাদেশ

গেল ১৫ মার্চ সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিল খেলোয়াড়রা। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ম্যাচের পর স্থগিত হয়ে যায় সব ধরনের ফুটবল। এর আগেই স্থগিত হয়ে যায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আসরের খেলাও। 

এরপরের সময়টা একরকম ঘরবন্দি কেটেছে কোচ, খেলোয়াড় আর কর্মকর্তাদের। বলা যায়, ফুটবল সংশ্লিষ্টরা বেকার সময় কাটিয়েছেন। গত আগস্টে কাতার বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের জন্য জাতীয় দলের অনুশীলন শুরু করতে গিয়ে বেশ বড় ধরনের বিপদেই পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। একাধিক খেলোয়াড়ের করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ার পাশাপাশি অনেকটা হঠাৎই স্থগিত করা হয় বিশ্বকাপসহ সব ধরনের বাছাইপর্বের খেলা। এরপর অনেকটা বাধ্য হয়েই ক্যাম্প বন্ধ করে দিতে হয় জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটিকে। কোচ-অধিনায়কবিহীন সেই প্রস্তুতি এবার পূর্ণতা পেয়েছে। 

আগামী ১৩ ও ১৭ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। ফিফা উইন্ডোতে আয়োজিত এই ম্যাচটিকে ঘিরে অন্যরকম প্রস্তুতি চলছে জাতীয় দলে। দীর্ঘ ১০ মাস পর প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগটাকে বড় করে দেখছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি যেহেতু ফিফা থেকে অনুমোদনকৃত এই ম্যাচ, সেহেতু এখানে র‌্যাঙ্কিংয়ের একটা বিষয় তো রয়েছেই। কারণ এই দুটি ম্যাচে জয় পেলে ২/৩ পয়েন্ট এগুতে পারে লাল সবুজ প্রতিনিধিরা।

সে হিসেবে নেপাল জয় করাই আপাতত লক্ষ্য জামাল ভূঁইয়ার দলের। ডেনমার্ক থেকে দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে সরকারের সব স্বাস্থবিধি মেনে অনুশীলন শুরু করার পরই পূর্ণতা পেয়েছে সবকিছু। 

নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে জাতীয় দলের এই অধিনায়ক বলেন, ‘এখন খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যার মধ্যে রয়েছি আমরা। বেশিরভাগ খেলোয়াড়রা খেলার মধ্যে নেই প্রায় ১০ মাস হতে চলল। বসুন্ধরা কিংসে থাকা বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছেন; কিন্তু আমার মতো বাকিদের অবস্থা যে ভালো নয়, সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে নেপালের বিপক্ষে জয়ের অপেক্ষায় রয়েছি। জয়ের কোনো বিকল্প নেই’। 

বাফুফে সভাপতিও জয়ের প্রত্যাশা করছেন। তবে তারচেয়ে বেশি প্রয়োজন খেলোয়াড়দের প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মাঠে নামানো। সেটি করার জন্যই নেপালকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর আগে শ্রীলংকাকে বাংলাদেশে আসার অনুরোধ করা হলেও সেটি রাখেনি তারা। অনেকটা জাতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করা হয়েছে, তেমনি করা হয়েছে ফুটবল দলের সঙ্গে। ঠিক সে সময় দেশের ফুটবলের বন্ধু হিসেবে পরিচিতি নেপালকে আমন্ত্রণ জানানো হলে তারা রাজি হয়ে যায়। এবার সেই দলের বিপক্ষেই র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে যাবার অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশ।

যদিও সারাদুনিয়ার মতো করোনা পরিস্থিতি উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই বাংলাদেশেও। তবুও সবকিছু ‘নিউ নরমাল’ বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সেখানে শামিল দেশের ফুটবলও। জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া সব মিলিয়ে সাত মাস পর অনুশীলনে ফেরেন। এরপরই তিনি কথা বলেছেন ভারতের ক্লাবে নিজেদের সম্ভাব্য দলবদল নিয়ে। আই লিগের ক্লাব কলকাতা মোহামেডানে যোগ দিতে পারেন জামাল- দলবদলের বাজারে এই গুজব বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। কলকাতার ক্লাবটিও জামালের ব্যাপারে আগ্রহী ছিল। তবে জামাল সরাসরি ভারতে খেলার বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন। তার কাছে বাংলাদেশ সবার আগে। 

এদিকে জাতীয় দলের সঙ্গে প্রধান কোচ জেমি ডে যোগ দেওয়ায় ফুটবলারদের মধ্যে বাড়তি উদ্দীপনা কাজ করছে। গত ২৩ অক্টোবর জাতীয় ফুটবল প্রাথমিক দলের ক্যাম্প শুরু হয়। এরপর একে একে কারো কুপার টেস্ট, কারও বিপ টেস্ট করানো হয়। জেমি সাথে নিয়ে এসেছেন তার দুই সহকারী স্বদেশি সহকারী কোচ স্টুয়াট ওয়াটকিস এবং নতুন নিয়োগ পাওয়া গোলকিপিং কোচ লেস ক্লিভলিকে। পাশাপাশি ফিনল্যান্ড হতে আগেই ফিরেছেন প্রবাসী ডিফেন্ডার কাজি তারিক রায়হান। তিনি ইতিমধ্যে কোয়ারেন্টিন শেষ করে ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //