স্লিম জিম ট্রিম

বিখ্যাত বাংলা ব্যান্ড চন্দ্রবিন্দুর একটি গানে আছে, ‘কেউ রাত্তিরে কম খাবে, হবে স্লিম জিম ট্রিম।’ নিছক রসিকতা করে এমন কথা বলা হলেও এটা কিন্তু স্বীকার করতেই হবে যে বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে রাতে কম খাওয়া এবং শরীরকে সঠিক মাপে ধরে রাখতে জিমে যাওয়া; এর কোনো বিকল্প নেই। আসলে জিমের সুবিধা সম্পর্কে সবাই জানেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না তাদের জিম লিমিট কতটুকু। তবে বিগত কয়েক বছরে পুনীত রাজকুমার, সিদ্ধার্থ শুক্লা, চিরঞ্জীবী সারজার মতো মধ্যবয়সী ভারতের তারকারা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর জিম নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

জিম করার অর্থ এই নয় যে ইচ্ছামতো পরিশ্রম করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিমের ভালো এবং খারাপ দুটি দিকই রয়েছে। এটি নির্ভর করে একজন কীভাবে জিম করছেন তার ওপর। চিকিৎসকরা বলছেন, ২০ থেকে ২৫ বছর আগে, ৩০ বছর বা তার কম বয়সী মানুষের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা খুবই কম হতো। কিন্তু ইদানীং এ ধরনের সমস্যা বেড়েই চলেছে। তাই অতিরিক্ত ব্যায়াম না করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

জিম করার ক্ষেত্রে একটি ব্যাপারে সতর্ক থাকতেই হবে। সেটা হলো ধারাবাহিকতা। অর্থাৎ প্রতিদিন ঠিক একই সময়ে জিমে শরীরচর্চা করতে হবে। নিজের প্রাত্যহিক কাজের রুটিনের সঙ্গে মিল রেখে জিমে যাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্বাচন করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে জিমে শরীরচর্চা শুরু করতে হবে। সেটা হতে পারে খুব সকালে, দুপুরের পর, বিকাল কিংবা সন্ধ্যায়। শুধু লক্ষ রাখতে হবে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার দিকে। চিকিৎসকরা বলেন, জিমে গেলে ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য একটি ওয়ার্মআপ করুন, ২০ থেকে ৩০ মিনিটের ব্যায়াম করুন, ৫ থেকে ১০ মিনিট শরীর ঠান্ডা করুন।

ওজন কমানোর জন্য মন দিয়ে ডায়েট, শরীরচর্চা করতে হবে ঠিকই; কিন্তু তাই বলে প্রথম থেকেই অতিরিক্ত ওজন তোলা, খুব বেশি ডাম্বেল এক্সারসাইজ করা উচিত নয়। প্রথমে ফ্রি হ্যান্ড, স্ট্রেচিং এসব বেশি করে করুন।

এ ছাড়া ব্যায়াম করার সময় বুকের বাম দিকে ব্যথা অনুভব করলে এবং জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হলে, এটিকে উপেক্ষা না করতে বলছেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে যদি পরিবারে হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস থাকে, সে ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকা উচিত বলে জানাচ্ছেন তারা। 

তবে বাস্তবতা হলো এই ব্যস্ততার যুগে সময় করে নিয়ম মেনে নিয়মিত জিম করা অনেকের জন্যই কঠিন। কাজের ব্যস্ততা ও পরিবারকে সময় দেওয়ার ফাঁকে জিমে সময় দেওয়া অনেকের কাছেই দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সে ক্ষেত্রে বলব ঘরে বা বাইরে হাঁটুন, দড়িলাফ খেলুন, ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ অথবা যোগব্যায়াম করুন। নিজেকে কর্মক্ষম ও নিয়মের মাঝে ধরে রাখার সুঅভ্যাসটি গড়ে উঠলে জিম ছাড়াই কিন্তু সুস্বাস্থ্য ধরে রাখা অসম্ভব কিছু নয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //