পূজার হাল ফ্যাশন

নীল আকাশের নিচে ভেসে যাচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা। দূরে কোথাও দোল খাচ্ছে সাদা কাশফুল। এ যেন উৎসবে মেতে উঠেছে প্রকৃতি। প্রকৃতির এই উৎসবের সঙ্গে যোগ হয় বাঙালির সর্বজনীন উৎসব দুর্গাপূজা। নীল আকাশ, সাদা মেঘ, কাশফুল এবং দুর্গাপূজা সব মিলিয়ে বাঙালির কাছে উৎসবের ঋতু হয়ে ওঠে শরৎকাল। উৎসবপ্রিয় বাঙালির যে কোনো উৎসবের সঙ্গে পোশাকের বিশেষ সম্পর্ক আছে। পূজার ক্ষেত্রে তা যেন আরও বেশি। উৎসবের আগে ফ্যাশন হাউসগুলোও নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাকের পসরায় সেজে ওঠে।

ফ্যাশন ডিজাইনার সাদিয়া ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে পূজার পোশাক হিসেবে শাড়ি ও পাঞ্জাবির কদর বেশি। তবে তাতে থাকতে হবে নতুন ডিজাইন। অর্থাৎ পূজার পোশাকে থাকতে হবে চলতি ট্রেন্ডের ছোঁয়া। আর থাকবে পছন্দের রঙ ও নান্দনিক কাজ।

ফ্যাশন হাউস টুয়েলভের সিনিয়র ফ্যাশন ডিজাইনার শুভাগত ভট্টাচার্য বলেন, এবার পূজা সামনে রেখে টুয়েলভ ক্লদিংয়ের আয়োজনে থাকছে কুর্তি, থ্রি-পিস, টিউনিক, পাঞ্জাবি ও কিছু ওয়েস্টার্ন কালেকশন। দেশীয় পোশাকের পাশাপাশি পশ্চিমা পোশাকেও চাহিদা থাকে প্রচুর। প্রতিবারের মতো এবারও পূজায় ট্রেডিশনাল একটা মোটিফ ব্যবহার করেছে ডিজাইনাররা। ওয়াটার লিলির ওপর বেসড করে বড় একটা কালেকশন দেখা যাবে। পূজার আগে আবহাওয়া কিছুটা গরম। তাই আমরা যতটা সম্ভব হালকা কাপড় ব্যবহার করেছি এবারের কালেকশনে। যেন দীর্ঘ সময় মানুষ তার পূজার লুকে আরামে ঘুরতে পারে।

ফ্রিল্যান্স ফ্যাশন ডিজাইনার সাদিয়া জাফর বলেন, প্রকৃতিতে এখন শরৎকাল চলছে, তাই পূজার পোশাকে শরতের রঙ গুরুত্ব পেয়েছে। নকশার জন্য পোশাকে স্ক্রিন প্রিন্ট, হ্যান্ড পেইন্ট, কারচুপি, মেশিন এমব্রয়ডারি করা হয়েছে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের থিম ভিন্ন হলেও অধিকাংশ ফ্যাশন হাউস প্রকৃতি এবং ঐতিহ্য নিয়েই কাজ করেছে। এসব ফুটিয়ে তুলতে গ্রাফিক্যাল জ্যামিতিক ফর্ম ব্যবহার করা হয়েছে এবং প্যাটার্নেও পরিবর্তন এসেছে। কাপড় হিসেবে ব্যবহার সুতি, খাদি, সিল্ক, হাফসিল্ক, ধুপিয়ান, অ্যান্ডি ইত্যাদি। 

তিনি আরও বলেন, কোনো কোনো হাউস পূজার ফ্যাশনের থিম হিসেবে আলপনা, শতরঞ্জি ও মানডালা ব্যবহার করেছে। আবার কোনো কোনো হাউসের পোশাকে দেখা যাবে ফুলেল শোভা। এ ধরনের পোশাকের নকশায় ফ্লোরাল প্রিন্ট ব্যবহার হয়েছে এবং কাপড় ব্যবহার করেছে সুতি, ভিসকস এবং সিল্ক। কারও মোটিফ আবার আবহমান ঐতিহ্য। এ ক্ষেত্রে তাদের পূজার ফ্যাশনে উঠে এসেছে গ্রাম-বাংলার উঠান-আলপনা, টেপাপুতুল, পেঁচা, পদ্ম, শিউলি, জবা, গাঁদা ও সবুজ লতার বন। এ ছাড়াও ট্রাইবাল মেডালিয়ন, ফল ল্যান্ডস্কেপ, আরবাসকিউ গ্রাফিক্স নিয়েও কাজ করেছে অনেক হাউস। তারা কাপড় হিসেবে সুতি, ভিসকোস, আর্ট সিল্ক, টু-টোন জ্যাকার্ড, ফেইলি, রেয়ন, ও সাটিন ব্যবহার করেছে।

এই ফ্যাশন ডিজাইনার পরামর্শ দিয়েছেন, পূজার সময় যথেষ্ট গরম থাকে। তাই হালকা এবং আরামদায়ক পোশাক পরে প্যান্ডেল ঘুরতে হবে। এ বছর নারীদের কাছে পূজার ট্রেন্ড হিসেবে আরামদায়ক কাফতানের কদর বেশি। পুরনো শাড়ি, বড় মাপের ওড়নাও কাফতান তৈরিতে কাজে লাগানো যেতে পারে। কাফতানের গলা ইংরেজি অক্ষর ভি, ইউ কিংবা গোলাকার হতে পারে। কাফতানের ঠিক বুকের কাছে ছোট্ট লকেট লাগালে পোশাকটির চেহারা পাল্টে যাবে। আবার কোমরের কাছে একটি বেল্ট বাঁধার ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। এতে শক্ত করে বাঁধার পর সেটি আঁটসাঁটও হবে আবার একটু অভিনবত্ব আসবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //