স্নিগ্ধ সাজেই কাটুক পূজার দিনগুলো

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার সবচেয়ে বড় আনন্দ সকালে অঞ্জলি দেয়া আর বিভিন্ন মন্দির ঘুরে বেড়ানো। তাই পূজা দেয়ার আগে নিজের সাজের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। পূজার দিনগুলোতে প্রতিদিনই চাই ভিন্ন সাজ আর আকর্ষণীয় লুক। 

পোশাক পরা থেকে শুরু করে চুল, মুখের সাজ- সবকিছুতেই যেন পূজার রেশ পাওয়া যায়। ষষ্ঠী থেকে দশমী টানা পাঁচ দিন। তাই সাজার সুযোগটা বেশি। দেশি বা পাশ্চাত্য যে ধাঁচেই সাজেন না কেন- খেয়াল রাখতে হবে এতে যেন আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সপ্তমী থেকে পূজার ঘোরাঘুরির মূল আনন্দ শুরু হয়। তাই এ দিনের সাজ-সজ্জার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নজরে রাখা জরুরি।

সপ্তমীতে একটু হালকা সাজ মানানসই। সপ্তমীর দিন থেকে নবমী পর্যন্ত সকালে পূজার অঞ্জলি দিতে যাওয়ার সময় সুতি শাড়ি বেছে নিন। সন্ধ্যার দিকে একটু ভারী সাজতে পারেন। দিনের বেলার সাজ যতটা সম্ভব হালকা হওয়া জরুরি। দিনে মন্দিরে যাওয়া বা পূজার অঞ্জলি দেয়ার সময় প্রকৃতির সজীব ভাবটা সাজে থাকা চাই।

দশমীর দিন সাজা চাই একেবারে মনের মতো করে। এদিন সিঁদুর খেলা হয়। তাই লাল বা গাঢ় রঙের পোশাক বেছে নেয়াই ভালো। দশমীর দিন বেছে নিন তাঁত, জামদানি বা ঐতিহ্যবাহী গরদের শাড়ি। হালকা ছাপার সুতি শাড়ি বা এক রঙের পাড়ওয়ালা শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ পরতে পারেন। 

সাজের সাথে গহনা না পরলে চলে? পূজার সাজে দিনের বেলা শাড়ির সঙ্গে লম্বা চেইন বা মালা পরতে পারেন। গলায় হালকা গহনা পরলে কানে ছোট ঝুমকা মানিয়ে যাবে। সাথে কাচের চুড়ি পরলে দারুণ লাগবে দেখতে। আর রাতের সাজে একটু জমকালো গহনা পরতে পারেন। গলায় চিক পরলে স্টাইলিশ দেখাবে। হাত ভরে মেটালের চুড়ি পরতে পারেন। এতে সাজে আভিজাত্য ফুটে উঠবে। শাড়ি পরলে মানানসই টিপ পরুন। নানান ডিজাইনের নথ পাওয়া যায় এখন। দশমীর দিন নাকে একটি নথ পরে ফেলতে পারেন। সাজে বৈচিত্র্য আসবে। 

মেকআপ 

স্নিগ্ধ সাজেই শুরু হোক পূজার দিনগুলো। মেকআপের শুরুতে মুখ পরিষ্কার করে সানস্ক্রিন লোশন লাগাতে ভুলবেন না। কারণ দিনে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। পোশাকের সাথে মেকআপটাও মানানসই হওয়া চাই। দিনের সাজটা হালকা রাখুন। ভারী ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করাই ভালো দিনের বেলা। গরমে মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এতে। তাই হালকা পাউডার বেজড মেকআপ ব্যবহার করুন। দিনের উৎসবে বেজ মেকআপ হতে হবে হালকা। অবশ্যই স্কিন টোনের সাথে মিল রেখে ব্লাশন। সকালের মেকআপে হাইলাইটার ব্যবহারের দরকার নেই। হালকা মেকআপের এই লুকে আপনি হয়ে উঠবেন অসাধারণ।

রাতের সাজের সময় কোনো বাধা নেই। তবে সাজুন সময় নিয়ে, যত্ন করে। রাতের মেকআপটা একটু ভারী হলেও সমস্যা নেই। তবে ত্বকের রঙের সাথে মিলিয়ে হালকা করে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে তার ওপর ফেস পাউডার বা ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার বুলিয়ে সেট করে নিতে হবে। 

চোখের সাজ 

সকালবেলার সাজে শাড়ির সাথে মিলিয়ে চোখে হালকা রঙের শ্যাডো লাগিয়ে নিন। দিনে চোখের সাজে অফ হোয়াইট হাইলাইট, বাদামি রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করা যেতে পারে। চোখের ভেতরে সাদা অথবা নুড কাজল দিয়ে সামান্য আইশ্যাডো ব্যবহার করে ব্লেন্ড করতে পারেন। চোখের ওপরের পাতায় আইলাইনার দিয়ে চোখের শেপ অনুযায়ী লাইন টেনে নিন। মিনিমাম দুই কোট করে মাশকারা লাগান। রাতের সাজের জন্য চোখের ওপরে গ্লিটার দেয়া যেতে পারে, চিকন করে লাইনার ও চোখভর্তি কাজল পরা যেতে পারে।

ঠোঁটের সাজ 

চোখের মেকআপ হালকা রেখে লিপস্টিকটা একটু উজ্জ্বল শেডের ব্যবহার করতে পারেন। চোখের সাথে মিল রেখে ঠোঁটে লাগাতে পারেন লিপস্টিক অথবা লিপগ্লস।

সিঁথিতে সিঁদুর

পরিণীতা হলে সিঁথিতে দিন সিঁদুর আর কপালে বড় লাল টিপ। এদিন হালকা গহনাই বেশি ভালো লাগে। সিঁদুর খেলার দিন অবশ্যই যাদের সেনসিটিভ স্কিন তারা একটু সাবধানে থাকবেন। নিজেকে সতেজ রাখতে বাইরে বের হওয়ার আগে ভালো মানের ডিওডোরেন্ট ও পারফিউম ব্যবহার করে নিন। 

চুলের সাজ 

শাড়ি বা কোনো পোশাকের সাথে চুলের সাজ জরুরি। পূজায় সাধারণত গরম থাকে তাই পোশাকের সাথে মানানসই করে চুল বেঁধে নিন। হেয়ারন স্প্রে দিয়ে চুলটাকে সেট করে নিন অনেক সময় পর্যন্ত চুল সেট থাকবে। যদি শাড়ি পরেন তাহলে চুলে খোঁপা বাঁধতে পারেন। খোঁপায় লাগাতে পারেন তাজা ফুল। সারাদিনের জন্য বের হলে চুল বেঁধে নেয়াই ভালো।

জুতা

পূজার পোশাকের সাথে জুতা বাছাই করার সময় আরামের কথাও ভাবতে হবে। পূজা দেখার সময় অনেক হাঁটতে হয়, তাই আরামদায়ক স্যান্ডেল পরুন। পূজামণ্ডপে যাওয়ার জন্য যদি অনেকটা হাঁটার প্রয়োজন হয়, তাহলে হিল এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। রাতের দাওয়াতে যাওয়ার জন্য বেছে নিতে পারেন মানানসই হিল জুতা। পূজার দিনগুলোতে সুন্দর থাকুন, সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //