মহিলা সমিতিতে মঞ্চস্থ হবে ‘তামাশা’

গঙ্গা যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে বুধবার (১১ অক্টোবর) মঞ্চস্থ হবে ‘তামাশা’। চন্দ্রকলা থিয়েটার প্রযোজনার এ নাটকটি মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহীম মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে।

নাটকের প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে নির্দেশক এইচ আর অনিক বলেন, পুরাতন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জনজীবন আর ঘটমান চালচিত্রর সময় কথোপকথনে তুলে ধরা হয়েছে ‘চন্দ্রকলা থিয়েটার’ এর চতুর্থ প্রযোজনা ‘তামাশা’। নাটকে দেখা যায়- পুরান ঢাকায় পাশাপাশি দুইটি বাড়ি। একটির মালিক টুন্ডা হাজি খুবই হাস্য রসাত্মক স্বভাবের এবং পেশায় পৈত্রিক সূত্রে ভাংগারী ব্যবসায়ী। তার একমাত্র মেয়ে লায়লী আর আল্লাদি বোন নূরজাহান। অন্য বাড়ীটির কর্ণধার মঞ্জিলা বেগম খুবই রাগী স্বভাবের। বাইতুল মোকাররমে তার রয়েছে একাধিক স্বর্ণের দোকান। জেদের বসে সে বিয়ে করে বাকরখানি বিক্রেতা চাঁন মিয়াকে। সেই থেকে চাঁন মিয়া ঘর জামাই। যার ফলে প্রতিনিয়ত চাঁন মিয়ার উপর মঞ্জিলার থাকে কঠোর নিয়ন্ত্রণ। তাদের একমাত্র ছেলে বাবুল ভালোবাসে টুন্ডা হাজির মেয়ে লায়লীকে। যেমনি করে তার ভাই ইউনুস টুন্ডা হাজির বোন নূরজাহানের প্রেমে জড়িয়েছিলো। যে জন্য দুই পরিবারের দ্বন্ধ পৌঁছে চরমে। লায়লী ও বাবুলের প্রেমযজ্ঞ দুই পরিবারের মধ্যে সৃষ্টি করে নতুন জট। এই নাটকীয় দ্বন্দ্ব গড়ায় কঠিন থেকে কঠিনস্তরে। এমনি হাস্যরসাত্মক ঘটনাবৃত্তে গড়ে উঠেছে তামাশার পটভূমি।

নাটকটি প্রসঙ্গে নির্দেশক এইচ আর অনিক বলেন, নাটক সত্য প্রকাশের অনবদ্য সৃজনকর্ম। সকল অশুভের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সংলাপকারুতে বাস্তবিকতার সচিত্র তুলে ধরাই নাটকের যথার্থতা। ‘তামাশা’ তেমনি একটি প্রযোজনা যেখানে হাস্যরসাত্মক সংলাপের মধ্য দিয়ে সমাজের ঘটমান নানা অসঙ্গতি তুলে ধরার প্রয়াস রাখা হয়েছে। মূলত এটি একটি দেশীয় মৌলিক হাসির নাটক।

তিনি বলেন, কমেডি নির্ভর দৃশ্যকাব্যে হাস্যরস্য সংলাপ ঝড়ে সময়ের নানা অসঙ্গতি এই নাটকে প্রতিয়মান, যা দর্শক উপলব্ধিকে আন্দোলিত করবে বলে বিশ্বাস। অস্থির এই বিশ্বে মানুষ এখন স্বস্তির মূহুর্ত খুঁজতে ব্যাকুল। আমি আশা করি তামাশা নাটকের হাস্য রসাত্মক উপস্থাপন দর্শকদের স্বস্তির মূহুর্ত উদযাপনে সহায়তা করবে এবং একরাশ বিনোদনের সাথে মানবিক সমাজ বিনির্মাণে এ নাটকটি যদি দর্শকদের বোধকে একটুখানিও নাড়া দেয় তবে আমাদের এই প্রয়াস সার্থক।

নাটক হচ্ছে সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম। সার্বিক অর্থে থিয়েটার হচ্ছে পরিচ্ছন্ন ও মানবিক জীবন গড়ার শাশ্বত পথ। কেননা নাটক সমাজ ও জীবনের কথা বলে। শুধুমাত্র চিত্ত বিনোদন হিসেবেই নয়, পাশাপাশি নাট্যসৃজনের শৈল্পীক আবেদন মানবিক উপলব্ধিকেও জাগ্রত করে। সেই মানসে ‘মঞ্চের আলোয় জেগে উঠুক সাহস নিয়ে সত্য’ শ্লোগানে ২০০৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ‘চন্দ্রকলা থিয়েটার’ এর আবির্ভাব। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাঙালি মানসে আরো সুদৃঢ় করা এবং ঐতিহ্যলব্ধ বাঙালি-সংস্কৃতি ধারণ করে ঋদ্ধ হতে চায় ‘চন্দ্রকলা’। এই প্রয়াস নিরন্তর ও ধাবমান। তারুণ্যদীপ্ত এ নাট্য সংগঠন নিবেদিত কর্মযজ্ঞের ধারাবাহিকতায় এরই মধ্যে অর্জন করেছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এবং বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ এর পূর্ণ সদস্য পদ। এই অগ্রযাত্রা বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে সাহস ও প্রেরণা জোগাবে।

নাটকটিতে অভিনয় করেছেন টুন্ডা হাজী চরিত্রে এইচ আর অনিক, লাইলী-রুনা, নূরজাহান- পপি/অবনী, খালাত ভাই- নাহিয়ান, পিএস ১- সৈকত, মঞ্জিলা - মলি, চাঁন মিয়া-মাসুম, বাবুল-আনিস, ইউনুছ- অঙ্গন, পিএস-২ রিয়াজ, উকিল-শুভ, ঘটক শকুন-গোলাম সারোয়ার।

নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা  দিয়েছেন এইচ আর অনিক। সংগীতে এস.এম অঙ্গন, মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় মনির, মঞ্চ পরিকল্পনায় মাসুম, পোশাক  মলি, আলোক পরিকল্পনা সাইদুর, রূপসজ্জায় মাসুম, প্রচ্ছদ আব্দুল মান্নান ও আব্দুল আহাদ, প্রযোজনা উপদেষ্টা মামুনুর রশিদ, পরিবেশনায় চন্দ্রকলা থিয়েটার।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //