আমি নিজেকে বেঁধে ফেলতে চাই না : ভাবনা

জনপ্রিয় অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। ছোটপর্দা, বড়পর্দা ও ওয়েব প্ল্যাটফর্ম- তিন মাধ্যমেই কাজ করছেন। অভিনেত্রী পরিচয়ের বাইরে তিনি একজন সাহিত্যিক ও চিত্রশিল্পী। গেল কয় বছর ধরে একুশের গ্রন্থমেলায় প্রকাশ হয়ে আসছে তার লেখা উপন্যাস কিংবা কাব্যগ্রন্থ। ভাবনার যাপিত জীবনের গল্প উঠে এসেছে সাম্প্রতিক দেশকালের সঙ্গে তার আন্তরিক আলাপচারিতায়। তার সঙ্গে আড্ডায় ছিলেন মোহাম্মদ তারেক।

ছকের বাইরের একটি চরিত্রে দেখা যাবে আপনাকে। এ বিষয়ে জানতে চাচ্ছি। 

চরকিতে মুক্তি পাবে ‘ওভারট্রাম্প’। ওখানে ‘রমা’ চরিত্রটি আমি করেছি। সত্যি বলতে কাজটি করতে চাইনি। তখন রাজবাড়ীতে ‘যাপিত জীবন’ ছবির শুটিং করছি। চরকির সঙ্গে প্রথম কাজ এটি। আমি জানতাম, কাজটি ভালো হলে শতভাগ হবে। না হয় ডাবল জিরো। অনেক চরিত্র। পরিচালক বাশার জর্জিস ছিলেন নাছোড়বান্দা। তার আমাকে লাগবেই। তার অফিসে গিয়েছিলাম বিনয়ের সঙ্গে ‘না’ বলতে। অথচ অফিস থেকে বের হলাম ‘হ্যাঁ’ বলে। 

‘যাপিত জীবন’-এর আনজুম থেকে ‘ওভারট্রাম্প’-এর রমা। একই সময়ে দুটো চরিত্রে অভিনয় করা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?

আমি একজন ভালো অভিনেত্রী হতে চাই। প্রত্যেক চরিত্রে চ্যালেঞ্জ থাকে। রমা চরিত্রটি কঠিন ছিল। রাজবাড়ী থেকে ঢাকা এসে শুটিং করা কষ্টকর ছিল। পুরো কাজটিই ছিল ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জিং। দর্শক আনজুমকে পরে দেখবে। আগে দেখবে রমাকে। আমি আসলে খুব দ্রুত সুইচ অন সুইচ অফ করতে পারি। চরিত্রে ঢোকার কোনো দরজা নেই। গত আড়াই বছর অভিনয় নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করেছি। কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছি। অভিনয়ের পদ্ধতি জানা থাকলে চাইলে অনেক কিছু করা সম্ভব। আনজুম ও রমা দুই মেরুর দুটো চরিত্র। মাঝে আমি ভাবনা। অভিনয় করার সময় ব্যক্তিজীবন অফ রাখি। মনোযোগী থাকার চেষ্টা করি। আমি আসলে স্বার্থপর। অভিনয়ের জন্য যে কোনো কিছু করতে পারি। 

আপনি একাধারে অভিনেত্রী, লেখিকা, চিত্রশিল্পী- এত পরিচয় সামলান কী করে?

দেখুন, আমি যা করতে ভালোবাসি তা করতে চাই। শিল্পের যে মাধ্যমে কাজ করতে পারি সে মাধ্যমে কাজ করছি। সমাজের যেসব অসঙ্গতি আমাকে নাড়া দেয়, তা ছবি ও লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করি। একেকটি ছবি একেকটি লেখা আমার উচ্ছ্বাস, বেদনা প্রকাশের মাধ্যম। আমি নিজেকে বেঁধে ফেলতে চাই না। জীবন যাপন করতে চাই। ভান ধরতে পছন্দ করি না। আমি বিশ্বাস করি, ভালো অভিনেতারা ভান ধরতে পারে না। ব্যক্তিজীবনেও আমি এমনই। 

এবারের বইমেলায় আপনার কবিতার বই এসেছে। পাঠকের প্রতিক্রিয়া কেমন পেলেন?

কবিতার বই তেমন বিক্রি হয় না। ‘ডানপন্থী কবিতারা’। এর মূল্য ৪০০ টাকা। আমার যেহেতু একটি পরিচিতি আছে, সেহেতু আমি স্টলে থাকলে বিক্রি বেশি হয়। তাই আমি মেলায় বেশ কদিন গিয়েছি। একটি ব্যাপার, আমি কিন্তু গৎবাঁধা প্রেমের গল্প বা কবিতা লিখিনি। আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম ‘রাস্তার ধারে গাছটার কোনো ধর্ম ছিল না’। পরেরটির নাম ‘ডানপন্থী কবিতারা’। আমি একটি স্টেটমেন্ট দিতে চেয়েছি কবিতার মাধ্যমে। পাঠক তা বুঝতে পারছে। তারা বলছে আমার বইয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আগের বইগুলোর কথা বলছে। পাঠক ফেসবুকে পোস্ট দেখে বই কিনতে এসেছে। আমার পাঠক তৈরি হচ্ছে। চাইলে কয়েকটি বই লিখতে পারতাম। তা করিনি। আমি এক লাফে উপরে উঠতে চাই না। আমি চলে যেতে আসিনি, থাকতে এসেছি।

অন্যান্য কাজের কী খবর? 

ঈদে খুব একটা কাজের ইচ্ছে নেই। বিভিন্ন চিত্রনাট্য হাতে আসছে। আমি দেখছি। দুয়েকটায় কাজ করার ইচ্ছে আছে। দুটো ওয়েব সিরিজের কথাবার্তা এগিয়েছে। ‘যাপিত জীবন’-এর ডাবিং করব সামনে। ‘দামপাড়া’ সেন্সরে চলে গেছে। এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে শুরু করব নতুন ছবি ‘এক্সকিউজ মি’র শুটিং।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //