১৫ বছরে রেলমন্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৩২ গুণ

গত ১৫ বছরে রেলপথ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজনের অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৫৪ গুণ। একই সঙ্গে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৭৪ গুণ। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণও। ২০০৮ সালের নবম এবং আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া দুটি হলফনামা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবারেও পঞ্চগড়-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন সুজন। পরপর তিনবার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। গত সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর দায়িত্ব পান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের।

হলফনামা অনুযায়ী, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নুরুল ইসলাম সুজনের নগদ অর্থ ছিলো তিন লাখ ৩১ হাজার ৬৩৪ টাকা এবং ব্যাংকে ছিলো ৪ লাখ ৭০ হাজার ৬৭৯ টাকা। ২০২৩ সালে এসে তার নগদ অর্থ দাঁড়িয়েছে এক কোটি ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৭১ টাকা এবং ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ এখন এক কোটি ৩৯ লাখ ২১ হাজার ৩৬৭ টাকা। অর্থাৎ, ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে মোট অস্থাবর সম্পত্তি ছিলো ৮ লাখ দুই হাজার ৩১৩ টাকা। যা গত ১৫ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার ৪৩৮ টাকায়।

তথ্য অনুযায়ী, মন্ত্রীর আয়ের পরিমাণও বেড়েছে ১৩ দশমিক ৭৪ গুণ। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নুরুল ইসলাম সুজনের বার্ষিক আয় ছিলো ৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষিখাত থেকে এক লাখ ৪ হাজার টাকা এবং আইন পেশা থেকে ৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা। ১৫০০ সিসির টয়োটা কার ছিল একটি। স্বর্ণ ছিল ২৫ ভরি যা বিয়েতে দান পেয়েছিলেন।

২০২৩ সালে এসে বার্ষিক আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৫ লাখ ১২ হাজার ৭৩৭ টাকা। এর মধ্যে কৃষিখাত থেকে দুই লাখ ৪৫ হাজার ৭২২ টাকা, মৎস্য চাষ করে আয় হয়েছে ৪৮ লাখ ১৫ হাজার ১৬ টাকা, বাড়ি ভাড়া থেকে দুই লাখ ৩৪ হাজার টাকা, শেয়ার/ব্যাংক আমানত থেকে ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৪ টাকা, আইন পেশা থেকে ২৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭ টাকা, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে ভাতা ও সুযোগ সুবিধা থেকে ২৩ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৮ টাকা। টানা তিনবারের এই সংসদ সদস্যের স্থাবর সম্পত্তিও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নুরুল ইসলাম সুজনের কৃষি জমি ছিলো ৮ একর এবং ঢাকার বাড্ডায় অকৃষি জমি ছিলো ৪ দশমিক ৯৫ কাঠার প্লট। বর্তমানে তার কৃষি জমির পরিমাণ ৩০ বিঘা এবং অকৃষি জমির মধ্যে ঢাকার বাড্ডায় ৪ দশমিক ৯৫ কাঠার প্লট, উত্তরায় ৫ কাঠার প্লট, বনশ্রীতে দুইটি ১১০০ বর্গফুটের ফ্লাট এবং ধানমন্ডিতে ১৮০০ বর্গ ফুট আয়তনের ২ দশমিক ৫ তলা সম্পন্ন পাকা বাড়ি রয়েছে। তবে ব্যক্তিগত কোন গাড়ির কথা উল্লেখ করা হয়নি। অর্জনকালীন এসব সম্পদের মূল্য হলফনামায় দেখানো হয়নি। 

অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজনের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের মহাজন পাড়া গ্রামে। তিনি পেশায় একজন আইনজীবি। বর্তমান পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পঞ্চগড়-২ আসনে প্রথম অংশগ্রহণ করে পরাজিত হন তিনি। পরে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০১৪ সালের দশম এবং ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন তিনি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //