ভোটার তালিকা হালনাগাদ

মৃত থেকে জীবিত হলেন ১৯ জন

যশোরের চৌগাছায় ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় মৃত দেখানো হয়েছিল এমন ১৯ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সবশেষ ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় প্রায় দুই হাজার মৃত ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। জানা যায়, এ সময় ভুলক্রমে অনেক জীবিত ব্যক্তির নাম মৃত ভোটার তালিকায় স্থান পেয়েছিল।

ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাচন অফিসে ২৪ জন ভোটার নিজেদের জীবিত দাবি করে আবেদন করেছেন। আবেদনের ফলে উপজেলা নির্বাচন অফিসের সুপারিশে ১৯ জন ভোটার তালিকায় আবারো জীবিত হিসেবে স্থান পেয়েছেন।

আরো পাঁচজনের তালিকা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার সেলিম রেজা।

তিনি বলেন, তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধনকারীদের ভুলে এতদিন তারা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) থাকা সত্ত্বেও সকল প্রকার নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, নতুন করে ভোটার তালিকায় মৃত থেকে জীবিতদের তালিকায় যারা স্থান পেয়েছেন তারা হলেন- চৌগাছা পৌর শহরের বাকপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নান শেখ (৬৭), কারিগরপাড়ার হাবিবুর রহমান (৪২), হালদারপাড়ার আন্না রানী (৪১) ও ইছাপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম (৫২)।

এছাড়া উপজেলার ফুলসারা ইউনিয়নের আফরা গ্রামের হামিদা বেগম (৪০), পাশাপোল ইউনিয়নের পলুয়া গ্রামের ঈমান আলী (৫৫), নারায়ণপুর ইউনিয়নের বাদেখানপুর গ্রামের আয়ুব হোসেন (৪৫) ও দাউদ হোসেন (৫৪), একই ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম মৃধা (৫২) ও পেটভরা গ্রামের কায়েম আলী বিশ্বাস (৬০), স্বরুপদহ ইউনিয়নের খড়িঞ্চা গ্রামের জামেনা খাতুন (৪২), গদাধরপুর গ্রামের আম্বিয়া খাতুন (৪২) ও বাজে খড়িঞ্চা গ্রামের মফিজ উদ্দীন (৪৭), পাতিবিলা ইউনিয়নের হায়াতপুর গ্রামের ওসমান সরদার (৭০), মুক্তদহ গ্রামের হাফিজুর রহমান (৪৫), নিয়ামতপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (৭০) ও পাতিবিলা গ্রামের ইছহাক আলী মিয়া (৫৫), সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের পুড়াপাড়া গ্রামের আব্দুল করিম (৫০) ও রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহানুর মন্ডল (৪৪)।

এদিকে জীবিত হিসেবে ভোটার তালিকায় স্থান পেতে যে পাঁচজন নতুন করে আবেদন করেছেন তারা হলেন- সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের খদেজা বেগম (৬৫), হাকিমপুর ইউনিয়নের তাহেরপুর গ্রামের সাফিয়া বেগম (৫৪),পাশাপোল ইউনিয়নের পাশাপোল গ্রামের নাজমা বেগম (৪৫), নারায়ণপুর ইউনিয়নের বুন্দুলিতলা গ্রামের হানিফ আলী বিশ্বাস (৭২) এবং ফুলসারা ইউনিয়নের সলুয়া গ্রামের ইমদাদুল হক (৫৭)।

আবেদনকারী বুন্দুলিতলা গ্রামের হানিফ আলী বিশ্বাস জানান, টিকার নিবন্ধন ও জমি ডকুমেন্ট অনলাইনে সম্পন্ন করতে গিয়ে জানতে পারেন তিনি ২০১৪ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন।  তাই নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে উপজেলা নির্বাচন অফিসে তিনি আবেদন করেছেন।

নিয়ামতপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটার তালিকায় দেখি আমার নাম নেই। তবে ভোট দিয়েছিলাম। সমস্যা হয়নি। ২০১৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। নির্বাচন অফিসে গিয়ে দেখি আমি মৃত।

তিনি জানান, সেই থেকেই সুবিধা বঞ্চিত ছিলেন। জীবিত হওয়ার জন্য ঘুরেছেন বছরের পর বছর।

গত ৭ জুন উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবেদনকারী ভোটাররা সকলেই জীবিত আছে মর্মে বিশেষ সুপারিশ করে নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিভাগের মহাপরিচালকের দপ্তরে পাঠান। এর পরে তাদের তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে জীবিত দেখানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, নতুন আবেদনকারীদের নাম তালিকায় পুনঃঅন্তর্ভূক্ত করার জন্য ইসি সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৯ জন মৃত দেখানো ব্যক্তির ভোটার তালিকায় জীবিত দেখিয়ে তথ্য সংশোধন করা হয়েছে। তারা আগের আইডি কার্ডেই এখন সরকারি সকল সেবা নিতে পারবেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //