পাশের বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে শূন্য পাস ৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বেড়েছে শতভাগ পাস ও শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে হানা গেছে, শূন্য পাস করা এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে (স্কুল ও মাদ্রাসা) পাশের সমজাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত করা হতে পারে। ইতিমধ্যে শতভাগ ফেল করা ৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

চলতি বছর এসএসসি ও সমমানের প্রকাশিত ফলে শূন্য পাস করা ৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২টি মাদ্রাসা ও ৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগই মাদ্রাসা। এ ছাড়া এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই মফস্‌সল এলাকার। হাতে গোনা শিক্ষার্থী নিয়ে নামকাওয়াস্তে চলে এসব প্রতিষ্ঠান। সুযোগ-সুবিধাও অপ্রতুল। এগুলোর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকিগুলো এমপিওভুক্ত নয়। তবে কিছু এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকেও শূন্য পাস হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ফল বিপর্যয়ের পেছনে গণিত, ইংরেজি, বিজ্ঞানের মতো কঠিন বিষয়গুলোতে ফেল; প্রতিষ্ঠানের আর্থিক দুরবস্থার কারণে শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন না হওয়া, নিয়মিত ক্লাস না নেওয়া, প্রশাসনিক অনিয়ম, বোর্ডের কিছু সিদ্ধান্তের ভুল, করোনা মহামারিসহ শিক্ষার্থীদের দারিদ্র্যসহ নানা কারণ উদ্ঘাটন করা হয়েছে।

শূন্য পাস করা এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার্থীরা। বিকল্প পদ্ধতিতে কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করা যায়, তা বিবেচনা করা হচ্ছে। যেসব স্কুলে শূন্য পাস সেখানে শিক্ষার্থী হয়ত একজন, ‍দুজন বা দশজনের কম। এসব প্রতিষ্ঠান যদি এমপিও নেয় তবে তাদেরকে পাশের স্কুলের সঙ্গে একীভূত করা যায় কি না সেটা ভাবা হচ্ছে।

এর আগে, গত রোববার (১২ মে) চলতি বছরের মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জানান, চলতি বছর শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ হাজার ৯৬৮টি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৫৯টি। বছরের ব্যবধানে শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ৬০৯টি। অন্যদিকে চলতি বছর একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫১টি। গত বছর সে সংখ্যা ছিল ৪৮টি। বছরের ব্যবধানে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ৩টি।

প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, বরিশালে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, সিলেটে ৭৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, ময়মনসিংহ ৮৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ ও যশোরে ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং কারিগরিতে পাসের হার ৮১.৩৮ শতাংশ।

৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মোট পরীক্ষার্থী ১৬ লাখ ৬ হাজার ৩৯৪ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ হাজার ৪৫ হাজার ৬৭৮। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৫। মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৮৪ হাজার ৬৬৫ জন। এরমধ্যে পাস করেছে ২ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৪। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ২০৬। কারিগরি বোর্ডের মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ২২ হাজার ৫৩৮ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৯৯ হাজার ৭২১। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৭৮ জন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //