ববির ১২ শিক্ষার্থীসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরের মামলা

গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন দুপুরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। হামলায় আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থী।

তবে এই হামলার নেপথ্যের কারণ বেরিয়ে এসেছে একটি সিসি টিভি ফুটেজে। যেই ফুটেজে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই প্রথম হামলা করেছিল সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির ও তার লোকেদের ওপর। আর সেই হামলার কারণ ছিল ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে অনুপ্রবেশে বাধা দেওয়া। অভিযোগ উঠেছে, ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশের চেষ্টা এবং হামলায় অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ তাদের সহযোগিরা ছিলেন বরিশাল সদর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিপনের ‘ট্রাক প্রতীকের’ অনুসারী।

এদিকে, হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ মোট ১৭ জন নামধারী এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৮-১০ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। হামলার শিকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির গত ১০ জানুয়ারি বাদী হয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ ব্যাচের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম শিকদার শাওন, শরিফুল ইসলাম, বাংলা-সাহিত্য বিভাগের ছাত্র রাকিবুল হাসান, বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান বাপ্পি, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী শফিকুল ইসলাম সুমনসহ ২৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির জানান, ৭ জানুয়ারি ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ জাগুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করে ১০-১২ জন বহিরাগত। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন হুমায়ুন কবির। এসময় বহিরাগতদের প্রবেশে বাধা দেন তিনি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয় তারা।

এর সূত্র ধরে দুপুরে নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি রেস্টুরেন্টে ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বরত এজেন্টদের জন্য খাবার নিতে আসেন হুমায়ুন কবিরসহ তার লোকেরা। এসময় কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ ট্রাক প্রতীকের সমর্থকরা হামলা করে তাদের ওপর। এমনটিই উল্লেখ করা হয়েছে মামলার এজাহারে।

মামলার তথ্য নিশ্চিত করে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আরিচুল হক বলেন, মামলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। মামলার বিষয়টি আমরা আদালতকে জানাবো।

অপরদিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর ড. মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোন কাগজ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেনি। আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে যদি অন্যায়ভাবে আক্রান্ত হয় তবে সে বিষয়ে আমরা কঠোরভাবে তাদের পাশে থাকবো। তবে তারা যদি বাহিরা গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে অন্যায় করে আহত সে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনভাবেই সমর্থন করবে না। এ বিষয়টি তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। তাছাড়া হামলার শিকার কেউ যদি আমাদের লিখিতভাবে জানায় তবে তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //