শিক্ষার্থীদের টাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা

বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের দাবি মেটাতে সরকার ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা নিয়ে এ তহবিল বাড়ানোর পথে হেঁটেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের থেকে বাধ্যতামূলকভাবে এ টাকা আদায় করা হবে।

২০২৪ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি স্কুল, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সংযুক্ত প্রাথমিক স্তরের নতুন ভর্তি নীতিমালায় এ বিধান রাখা হয়েছে। রবিবার (২২ অক্টোবর) শিক্ষাসচিব সোলেমান খানের সই করা নীতিমালাটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

নীতিমালার ১০(৬) ক্রমিকে বলা হয়, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলের জন্য ভর্তিকালীন সময়ে শিক্ষার্থীপ্রতি ১০০ টাকা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট হিসাব খাতে জমা দিতে হবে। এর মধ্যে ৭০ টাকা অবসর সুবিধা ফান্ডে, বাকি ৩০ টাকা কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ডে জমা দিতে হবে। মাউশি, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এ ফি দিতে হবে।

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) ২০২২ সালে জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী- দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭৪ জন। এর মধ্যে ৯৪ শতাংশই বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।

শিক্ষকদের কল্যাণে সরকার পদক্ষেপ নিলে শিক্ষার্থীদের ওপর কেন অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ফি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, তাদের ৬ শতাংশ কাটা হতো আগে। এখন তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ কাটা হচ্ছে। এ ফান্ডের জন্য এখন শিক্ষার্থীদের থেকে ফি নেওয়া হচ্ছে।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব (চুক্তিভিত্তিক) শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এমপিও অর্থাৎ সরকারের দেওয়া বেতনের অংশ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কেটে রাখা হয়। এটা খুবই কম। টাকার অংক বলার মতো নয়। অবসরের পর তারা যখন এ টাকা পেতে আবেদন করেন, তখন আমাদের তা মেটাতে হিমশিম খেতে হয়। তহবিল না থাকায় আবেদন করেও যথাসময়ে টাকা পান না অনেকে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য আমরা সবসময় দাবি জানিয়ে আসছি। বেসরকারি শিক্ষকদের ব্যাপারেও সরকার আন্তরিক। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় কিছু টাকা জমার বিষয়টি ভর্তি নীতিমালায় যুক্ত হয়েছে। এটা শিক্ষক-কর্মচারীদের কল্যাণেই ব্যয় হবে।’

জানতে চাইলে শিক্ষাসচিব সোলেমান খান বলেন, ‘২০২২ সালের ভর্তি নীতিমালাতেও এটা ছিল। এবারই নতুন নয়। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনের তাগিদে এটা নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ভর্তির সময় বছরে একবার ১০০ টাকা করে দেবে। এটা তাদের শিক্ষকদেরই অবসরে যাওয়ার পর বোর্ড ও ট্রাস্ট থেকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //