কম সুদে ঋণ পাবেন কলেজ শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার মান বাড়াতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দুই সহস্রাধিক কলেজে তৈরি হচ্ছে নতুন কৌশলপত্র। কলেজ পর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন হচ্ছে। নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা অনুযায়ী শিক্ষাবিদরাই হবেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি।

গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত ল্যাব, অনলাইন ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক ও ই-লাইব্রেরির সুবিধা চালু করা হবে। দরিদ্র্র ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হবে বৃত্তি। ক্ষেত্রবিশেষে বিনামূল্যে পাঠদানের ব্যবস্থা থাকবে। শিক্ষার্থীরা পাবেন কম সুদে ঋণ।

এরই মধ্যে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের গবেষণার মাধ্যমে খসড়া কৌশলপত্র তৈরি করা হয়েছে। এ খসড়াতে কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে বেসরকারি কলেজের ডিগ্রি স্তরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা চালু করা হবে। এ জন্য নতুন নতুন পদ যোগ করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) থেকে কৌশলপত্রের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে দেশের কয়েকটি স্থানে ও জাতীয় পর্যায়ে ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছে সিইডিপি। শিক্ষামন্ত্রীসহ শিক্ষাবিদদের মতামত গ্রহনের জন্য  শিগগির আরও বড় আকারে একটি কর্মশালা করা হবে। এর পর চূড়ান্ত করা হবে কৌশলপত্র।

কৌশলপত্রের খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলো পরিচালনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি নীতিমালা তৈরি করা হবে। কলেজগুলোতে গবেষণা, গবেষণার ফল কাজে লাগানো এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মধ্যে ঘনিষ্ঠ কর্মসম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ জন্য উভয় প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে।

জানতে চাইলে সিইডিপি প্রোগ্রাম অফিসার (পরিকল্পনা) ড. এ কে এম খলিলুর রহমান বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার মান বাড়াতে বিশিষ্টজনের গবেষণার মাধ্যমে খসড়া কৌশলপত্র তৈরি করা হয়েছে। এতে কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বেসরকারি কলেজগুলোর পরিচালনা পর্ষদ বা গভর্নিং বডি (জিবি) গঠনের বিষয়ে খসড়ায় বলা হয়েছে, জিবির চেয়ারম্যান হবেন একজন শিক্ষাবিদ। সদস্যরা মনোনীত হবেন শিক্ষাগত যোগ্যতা ও মেধা অনুযায়ী। সদস্য সংখ্যা বর্তমানে যা আছে, তার চেয়ে কমাতে হবে। তাঁদের কাজ করার ক্ষেত্র নির্ধারণ করে নিতে হবে। জিবির অ্যাডহক ও একাডেমিক কমিটিতে সদস্যদের যোগ্যতা ও সদস্য কমানোর জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা সংশোধনের কথা বলা হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বোর্ড অব ডিরেক্টর এবং বোর্ড অব স্টাডিজ গঠন করতে হবে। বোর্ডগুলো তাদের নির্দিষ্ট পরিসরে দায়িত্ব পালন করবে। বোর্ডের কর্মকাণ্ড তদারকিতে নজরদারি বাড়াতে হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষার মানোন্নয়নে আরও বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোচিং-নির্ভরতা কমানো, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ঋণের ব্যবস্থা করা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষকদের পাঠদানের দক্ষতা বাড়াতে তাদের তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মানোন্নম্নয়নসহ ধারাবাহিকভাবে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাড়াতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির ওপর শিক্ষকদের ওয়ার্কশপ হবে নিয়মিত। অনলাইনে গবেষণা বাড়াতে হবে। শিক্ষকরা বিভিন্ন বিষয় এখানে যুক্ত করবেন এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে তা বিতরণ করবেন। কলেজ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্নিষ্ট কর্মমুখী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করবেন, যেন শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে হাতেকলমে শিখতে পারেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //